রামরাজনীতি ভুলে, রামনবমীতে সম্প্রীতির বার্তা ইমামের
Forgetting Ram politics, Imam sends message of harmony on Ram Navami

Truth of Bengal: রাজ্যজুড়ে রামনবমীকে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনা। অস্ত্রের ঝনঝনানির ডাক গেরুয়া শিবিরের। ঠিক সেই সময় শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিলেন আসানসোল নূরানী মসজিদের সেই ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদি। অতীত ভুলে রামনবমীকে সম্প্রীতির উৎসবে পরিণত করার আহ্বান জানালেন তিনি।
এই শহরেই জন্ম কাজী নজরুল ইসলামের। যিনি সারা জীবন সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। শহর ঢুকতেই লেখা সিটি অফ ব্রাদারহুড অর্থাৎ ভ্রাতৃত্বের শহর। কিন্তু এ শহরেই ২০১৮ সালে রাম নবমীতে ঘটেছিল অশান্তির ঘটনা। প্রাণহানি ঘটেছিল বেশ কয়েকজনের। আহত হয়েছিলেন অনেকে। ঘরে আগুন, ভাঙচুর ঘটেছিল। ঘরছাড়া হয়েছিল অনেকে। সেই সময় নিজের ছেলে হারিয়েও শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন নূরানী মসজিদের ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদি। রামনবমীতর প্রাক্কালে দিচ্ছেন শান্তির বার্তা।
কিন্তু বাম ডান গেরুয়া এখনও হাঁটছেন নিজের পথে। নিজের নিজের রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলছেন তারা।এই মুহূর্তে রামনবমী নিয়ে আসানসোলে জোর রাজনৈতিক জল্পনা। উত্তেজনার পারদ উঠছেই ক্রমশ রামনবমীকে সামনে রেখে। অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে এই রামনবমীকে কেন্দ্র করেই আসানসোল এবং রানীগঞ্জে অশান্তি ছড়িয়েছিল। বিধানসভা ভোটের আগে আসানসোলে তাই রামনবমীকে সামনে রেখে রাজনীতিকে ধর্মের মোড়কে মুড়ে বিজেপি ট্রাম্প কার্ড খেলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। তবে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি মিছিল হবেই। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের ছবি সহ রামনবমীর হোডিং এ ছেয়েছে শহর। অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, যেমন ভাবে প্রতি বছর মিছিল হয়, সেই ভাবেই মিছিল হবে আসানসোলে। প্রশাসন সতর্ক থাকুক তবে বাধা দিতে এলে তার সমস্ত দায়ভার কিন্তু প্রশাসনের উপর এই বর্তাবে। তবে ‘মিছিলে’ না নেই তৃণমূলের।
তৃণমূল রাজ্য কোর কমিটির সদস্য অশোক রূদ্র বলেন, “রামনবমীর শোভাযাত্রায় আমরাও নিজেরাও অংশ নেবো। বিভিন্ন সংস্থা আমন্ত্রণ করেছে। তবে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমীর শোভাযাত্রা পালিত হোক। কিন্তু রামনবমীকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ফয়দার রুটি সেঁকার যারা চেষ্টা করছে তাদের অভিপ্রায় সফল হবে না।”
অন্যদিকে সিপিএম রানীগঞ্জ এরিয়া কমিটির সম্পাদক হেমন্ত প্রভাকর বলেন নেতৃত্বে বলছেন ডিওয়াইএফআইয়ের যুবরা থেকে শুরু করে রেড ভলেন্টিয়াররা রাস্তায় থাকবেন। যেকোনো ধরনের সহযোগিতায় তারা মানুষের পাশে থাকবেন। শোভাযাত্রা ঘিরে যাতে কোন রকমের অশান্তি না হয় সেদিকে তারা লক্ষ্য রাখবেন।
২০১৮ সালের রামনবমীর অশান্তিতে নিজের সন্তানকে হারিয়েও হিংসা থামানোর বার্তা ছড়িয়ে ছিলেন আসানসোলের সেই ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদি। ইমাম সাহেবের মতে, মানুষ অতীতের খারাপ স্মৃতি মনে রাখতে চায় না। আসানসোল ভ্রাতৃত্বের শহর। এখানে ভ্রাতৃত্ব নিয়েই সমস্ত ধর্মপালিত হয়। খুশির ঈদ যেমন ভাবে পালিত হয়েছে রামনবমী শোভাযাত্রাও অহিংসায় পালিত হবে।