রাজ্যের খবর

দ্বিজা হলেন কৈরভি, বৈদিক রীতি মেনে পৈতে হল কন্যা সন্তানের

Dwija is Kairvi, the daughter of this Banerjee family

The Truth of Bengal: বৈদিক রীতি মেনে পৈতে হল সিউড়ির কৈরভি বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সাধারণতঃ পুত্র সন্তানদেরই পৈতে হয়, কিন্তু মেয়েরা কেন এই উপবীত থেকে বঞ্চিত থাকবেন ? একথা ভেবেই ছক ভাঙা অনুষ্ঠান দেখা গেল বীরভূমের সিউড়িতে। সামাজিক সাম্যের জয়গান গেয়ে  অন্যরকম অনুষ্ঠান দেখা গেল এখানে।ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে এই কুমারীকন্যা  উজ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করল। বৈদিক যুগে মেয়েদের পৈতে হত।পরবর্তী সময়ে তা আর দেখা যায়নি।তাই বৈদিক আমলের মেয়েদের সেই হৃত অধিকার ফিরিয়ে দিল সিউড়ির বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার।দ্বিজা হল এই পরিবারের কুমারী কন্যা কৈরভী। একসময় লালন ফকির প্রশ্ন তুলেছিলেন,পৈতে দেখে বামুন চেনা যায়,বামনি কী প্রকারে চেনা যাবে ? লালনের সেই  কথা এখন এই যুগে আর যাতে শোনা না যায়,তারই যেন ব্যবস্থা করলেন বসন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়।

বসন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এখন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক। তাঁর স্ত্রী কৌশানী চট্টোপাধ্যায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। কলকাতায় বি সি রায় চাইল্ড হাসপাতালে কর্মরত। থাকেন কলকাতার যাদবপুরে। মেয়ে কৈরভী (জ্যোৎস্না) কলকাতার একটি সিবিএসই অনুমোদিত স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।মেয়ের উপনয়নের ব্যবস্থা করে সমাজকে বার্তা দিলেন তাঁরা। বসন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০১৪ সালে কৈরভীর অন্নপ্রাশনের সময় পুরোহিত যজ্ঞ করতে রাজি ছিলেন না। তাঁর মত ছিল, যজ্ঞ কেবল পুত্রের অন্নপ্রাশনের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। মেয়েদের বিয়ের সময় শুধু যজ্ঞ করা যায়।

এরপর  বই ঘেঁটে, ইস্কন ও বারাণসীর পাণিনি কন্যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কলকাতার আর্য সমাজ মন্দির, রবিশঙ্করের বৈদিক ধর্মসংস্থান—সব জায়গা থেকে খোঁজ নিয়ে দম্পতি নিশ্চিত হন যে, কন্যার উপনয়ন দেওয়া সম্ভব। কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন ওই দম্পতি। তাদের সিউড়ির রামকৃষ্ণপল্লীর বাস ভবনে মেয়ের উপনয়নের আয়োজন করা হয়।কৈরভী চায় অন্যান্য মেয়েদেরও যেন এভাবে পৈতে হয়,যাতে বৈদিক রীতি বজায় রেখে সমাজ একসূত্রে গাঁথা থাকে।

Related Articles