বয়রা কালীর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে বিদেশেও,মনস্কামনা পূরণ হয় বলে বিশ্বাস
By spreading the greatness of Boyra Kali abroad, it is believed that wishes are fulfilled

Truth of Bengal: উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের বয়রা কালীপুজোর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে আছে আশপাশের জেলা সহ নেপাল ও বাংলাদেশে। পূযও দিতে আসেন সবাই। অনেকের বিশ্বাস মা বয়রা খুব জাগ্রত। যে যা মনস্কামনা নিয়ে আসেন মা বয়রা কাউকে খালি হাতে ফেরত পাঠান না। উত্তরে কালী পুজো মানেই ঐতিহ্যবাহী উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের বয়রা কালীপুজো।
এই পুজোকে ঘিরে দূরদুরান্ত থেকে মানুষের ঢল নামে মন্দিরে। প্রশাসনের তরফে মন্দির চত্বরে মোতায়ন করা হয় প্রচুর পুলিশ। কালিয়াগঞ্জের সঙ্গে কালীপুজোর অন্তরঙ্গের মিল রয়েছে। সেই কারণে কালিয়াগঞ্জের রাজনন্দিনী বয়রা কালী দর্শন মাত্রই মানুষের মন শান্ত হয়ে যায়। পুজোর দিন বয়রা মায়ের মন্দিরকে কৃত্রিম ফুল-সহ নানা সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়।
বিশেষ আকর্ষণ হল মা বয়রার পা থেকে মাথা পর্যন্ত সারা শরীর সোনার অলঙ্কারে সাজিয়ে তোলা হয়। মা বয়রা রাজনন্দিনী রূপে সেজে উঠেন। এই পুজোর আর এক বিশেষত্ব হল সাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য। জানা যায়, কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতি নদীর তীরে এক সময় বয়রা কালী পুজো শুরু হয়েছিল।
একদা শ্রীমতি নদী খরস্রোতাও বিস্তৃত ছিল। সেই সময় বড় বড় নৌকা এলাকার নদী ঘাটে এসে ভিড়তো। শোনা যায়, সেই সময় শ্রীমতি নদীপথে কালিয়াগঞ্জে যে সমস্ত বনিকরা বাণিজ্যের জন্যে আসতেন, তারা নদীর তীরে একটি জঙ্গলের মাঝে বয়রা গাছের তলায় এই পুজোর সূচনা করেছিলেন।
সেই থেকে মা বয়রা কালী নামে এই পুজোর নামকরণ। দীর্ঘ দিন বাদে কালিয়াগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর প্রচেষ্টায় পুরনো মন্দিরের জায়গায় নতুন মন্দির তৈরির বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৮৮ সালে বর্তমান মন্দির গড়ে তোলা হয়। রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের পাশেই এই মন্দির অবস্থিত।
১৯৯৮ সালে কালিয়াগঞ্জবাসীর প্রচেষ্টায় মায়ের অষ্টধাতুর বিগ্রহ তৈরি করা হয়। কৃষ্ণনগরের শিল্পী এই বিগ্রহ নির্মাণ করেন। মা বয়রা কালীর আকর্ষণে শুধু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই নয়, বিভিন্ন রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসেন। তাঁরা এখানে পুজো দেন।
অনেকের বিশ্বাস মা বয়রা খুব জাগ্রত। যে যা মনস্কামনা নিয়ে আসেন মা বয়রা কাউকে খালি হাতে ফেরত পাঠান না। মঙ্গলবার ও শনিবার এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন বহু মানুষ। কালী পুজোর সময় এই মন্দিরের চেহারা পাল্টে যায়। মা বয়রার পুজোতে ৫ রকমের মাছ ও ৫ রকমের ভাজা ও সব্জি দিয়ে ভোগ হয়।
প্রতিবছর ভক্তদের সমাগমে তীর্থ ক্ষেত্রের রূপ পায় এই পুজো। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই পুজোয় ছাগ বলি হতো। কিন্তু করোনা অতিমারির পর থেকে মন্দিরে বলি প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবছর মতো এবছর নিষ্টা সহকারে পুজো হবে। ভক্তদের ভিড়ে গমগম করবে মন্দির প্রাঙ্গন। এসেই গেল পুজো। জোর কদমে শুরু করে দিয়েছে পুজো প্রস্তুতি।