রাজ্যের খবর

বনেদিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন, ঘোষাল বাড়িতে স্বপ্নাদেশ মেনে হয় দেবী দুর্গার আরাধনা

Blending modernity with Banediana, Goddess Durga is worshiped at Ghoshal house.

Truth Of Bengal : জমিদারী আমলের জৌলুস কমলেও জনপ্রিয়তা কমেনি কোন্নগরের ঘোষাল বাড়ির পুজোয়। স্বপ্নাদেশ মেনেই এখানে আদ্যাশক্তির আরাধনা হয়। বনেদিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটানো হয় এই পুজোয়। এবার দুর্গাপুজো ৫৭০বছরে পদার্পণ করায় মন্দিরের রূপবদল করা হচ্ছে নতুন উদ্যমে। এবার  উল্লাস কম হলেও উত্সবের আমেজে আলাদা মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আরজি করের নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে নাটক মঞ্চস্থ করবেন বাড়ির সদস্যরা।

বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। ঢাকের তালে কোমর দোলাতে তৈরি হচ্ছে আমবাঙালি। আর বাঙালির সেরা পুজোয় মেতে উঠতে এখন ঘোষাল বাড়ির ঠাকুর দালানে চলছে টাচ দেওয়ার কাজ। যেহেতু এবার পুজো ৫৭০ বছরে পদার্পণ করেছে তাই উত্সবের আঙিনায় এখন রূপবদল চলছে। জমিদার বাড়ির ট্রাডিশন মেনে এবারও জাঁকজমক না করেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে।উদ্যোক্তারা বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই পুজোর চল শুরু হয়। ঘোষাল বাড়ির পুজোয় খুশি হয়ে ব্রিটিশ সরকার অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা করে।সেসময় ৭৫০টাকা অনুদান দেওয়া হত। সেই টাকা খরচ করতে পারতেন না কোন্নগরের এই জমিদার বাড়ির সদস্যরা।

দিন বদলের পর এখন নিজেরাই পুজোর আয়োজন করেন বর্তমান সদস্যরা।  এবারও নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোপাঠ করার ভাবনা নিয়েছে ঘোষাল বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম। বাড়ির দুর্গা পুজোকে ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেন পরিবারের ৮ থেকে ৮০ সকলে। আগে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর বসতো। এই বাড়ির সদস্য ছিলেন সতেন্দ্রনাথ ঘোষাল। তিনি আসর জমিয়ে দিতেন।এখনও ঐতিহ্য মেনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় এই বাড়িতে।

বাড়ির সদস্য ও প্রবীণ সাংবাদিক প্রবীর ঘোষালের মতোই অন্যান্য সদস্যরা বলছেন, স্বপ্নাদেশ মেনে ১৪৫৪খ্রীষ্টাব্দে শুরু হওয়া পুজো আজও রীতি মেনে করা হচ্ছে। এবার বাড়ির মহিলা ও পুরুষরা মিলে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছেন আরজিকর ঘটনার প্রতিবাদে। যার নাম দেওয়া হয়েছে অপরাজিতা।

পুজোর বিশেষত্ব গুলির মধ্যে অন্যতম একটি হলো এই পুজায় বাইরের দোকানের কোন মিষ্টি ব্যবহার করা হয় না। বাড়ির মহিলারা নিজেরাই নারু তৈরি করেন। সেই নারু দিয়েই হয় ঠাকুর প্রসাদ। অষ্টমীর দিনে সন্ধ্যা প্রদীপ জালেন বাড়ির পুরুষ মানুষরা। দশমীর দিন বাড়ির এও স্ত্রীরা ঠাকুরকে ইলিশ মাছ দিয়ে ভোগ দেন। কনকাঞ্জলি দিয়ে বরণ করে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বাড়ির মহিলারা।

Related Articles