রাজ্যের খবর

কোন্নগরে রাজ রাজেশ্বরী সেবা মঠে পালিত হল দীপান্বিতা কালীপুজো

At Raj Rajeshwari Seva Mutt in Konnagar, Deepanvita Kali Puja is celebrated

Truth Of Bengal: রাকেশ চক্রবর্তী, হুগলি: কোন্নগর রাজরাজেশ্বরী মহালক্ষ্মী মাতার মন্দিরে, হিন্দু শাস্ত্র ও বিধি মেনে, পালিত হল দীপান্বিতা কালীপুজো। জগৎগুরুসেবা শ্রী শঙ্করাচার্য প্রতিষ্ঠিত রাজেশ্বরী মন্দির তথা সেবা মঠে উক্ত দিবসে প্রথমে সিদ্ধিদাতার আরাধনা করে শাস্ত্রবিধি অনুসারে দীপান্বিতা কালীপুজো উপলক্ষে মাতার পূজা সুসম্পন্ন হল।

এমনিতেই এই মন্দির মহালক্ষী রাজরাজেশ্বরী মাতার পিঠস্থান। তার মধ্যে হিন্দু শাস্ত্র ও বিধির অনুসারে, দীপান্বিতা কালীপুজোর দিন দেবী মা কালীকার পূজার প্রচলন যা ঘরে,মন্দিরে,সর্বত্র পালিত হয়ে আসছে সেই উৎসবও এই রাজরাজেশ্বরী মাতার মন্দিরে বিপুল সমারোহে পালিত হল। এই দিবসে সকল দেবীরূপ কে বা যোগিনীদের পূজা করা হয়।

পঞ্চামৃততে অভিষেক করানো হয় শিবলিঙ্গ কে এবং নব প্রতিষ্ঠিত স্ফটিক স্বরুপেশ্বর শিবলিঙ্গ কে। মহালক্ষ্মী মাতার বিশেষ পূজা ও কালীকা দেবী মাতার রূপের পূজা তথা ৫৬রকম মহাভোগে পূজা করা হয় এই দিন। এই দিবসে শ্রী যন্ত্রের প্রতি বিশেষ অভিষেক করানো হয় মাতা রাজরাজেশ্বরী, বা মহালক্ষী মাতা কে লাল বেনারসি এবং ওড়না সাজে অলংকৃত সুসজ্জিত করা হয়। ১০৮ টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে সন্ধ্যা আরতি করা হয়। শ্রী’ যন্ত্রের ও শঙ্খের পূজা বিশেষভাবে করা হয় এছাড়া হোম যজ্ঞ করা হয় এই মন্দিরে।

মাতা কে বিভিন্ন প্রকার ভোগ নিবেদন করা হয় অন্য ভোগ থেকে শুরু করে, ফল-ফলাদি বস্ত্র, শাঁখা সিঁদুর এমনকি সোনার গহনা নিবেদন করা হয়। এই দিন মাতা কালীকা দেবীকে সোনা এবং রুপা এবং স্ফটিকের অলংকারে সুসজ্জিত করা হয় এমন ভাবে যেন স্বর্গের দেবী জাগ্রত রূপে এখানে বিরাজ করছেন এছাড়া নারী এবং শিশু কন্যাদের প্রতি বিশেষ সম্মান ও দান ধ্যান করে মাতা লক্ষ্মীর অবস্থান কে জাগ্রত করা হয় এই মন্দিরে। দুপুরে সকলকে মাতা লক্ষী ও, দীপান্বিতা কালিকা মাতার ভোগ প্রসাদ বসিয়ে খাওয়ানো হয়, এমনকি একজনও অভুক্ত অবস্হায় ফেরেনি এই মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে ।ভক্তবৃন্দ যাতে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন তার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দীপান্বিতা কালী পূজার দিনে কালিকা দেবী মাতার সাজ ও পূজা জমজমাট হয়ে ওঠে রাজ রাজেশ্বরী সেবা মঠ।লক্ষীপূজা উপলক্ষে অখন্ড প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়। এছাড়া শঙ্খধ্বনির সাথে বিভিন্ন সুগন্ধি, পুষ্প,ধূপ দীপ সহ সায়ম্বরে দিপাবলী উৎসব পালিত হয়,পাশাপাশি,শক্তি এবং আলোর উৎস হিসেবে ১০০১টি প্রদীপ প্রজ্জলন হয় এই মন্দির গর্ভগৃহে। ভজন নাম সংকীর্তন উৎসব শুরু হয়েছে মঠে। ধনলক্ষ্মীর পূজা তথা কালীকা দেবী কেন্দ্র করে সেজে উঠেছে রাজরাজেশ্বরী মন্দির ও মঠ। রাজরাজেশ্বরী সেবা মঠে চলছে লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা।

প্রতি বছরের মত এই বছরও রীতি ও নিষ্ঠা সঙ্গে মঠে পুজোপাঠ হচ্ছে। কোনোরকম শব্দদুষন বা বিশৃঙ্খলা বা আপ্যায়নের ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় নি। করো না পর্বের পর এবার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে রাজ রাজেশ্বরী সেবা মঠ। তাই দূর দুরন্ত থেকে অগণিত ভক্ত সেবা মঠে মা এর দর্শনে আশা শুরু করেছেন। ভক্ত সমাগম হবে বলে মনে করেছেন মঠ কর্তৃপক্ষ, সেই কারণেই নিরাপত্তায় বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ধন সম্পদ ঐশ্বর্যের দেবী হলের লক্ষ্মী। সুখে শান্তিতে বাস করতে অর্থের প্রয়োজন তাই সবাই চান ধন-সম্পদে থেকে পরিবার-পরিজনসহ জীবন ধারণ করতে। মন্দিরের মূল প্রধান মহারাজ সচ্চিদ্ স্বরূপ এবং শ্রীধর ত্রিবেদী বলেন, এই বিশেষ পুজো, দিপান্বীতা অমাবস্যাতে ব্রহ্মচারী মহারাজ, হৃত্তিক মিশ্রা, সৌরভ মিশ্রা, রবি চৌবে পূজার আয়োজনে ছিলেন ও সুনীল দাগা, বাদ শালা দাগা উপস্থিত ছিলেন।

মাতালক্ষী ছাড়া এই জগত সংসার শ্রীহীন তারই আধাররূপিনী দেবী কালীকা মাতার অবস্থান ছাড়া জগত সংসার শক্তিহীন অভুক্ত তাই মহালক্ষ্মী মাতা রাজরাজেশ্বরী মন্দিরে ও মঠে এই পুজো চলে আসছে ও আগামী দিনেও সমারোহে পালিত হবে এই উৎসব জগৎসংসারের কল্যাণ কামনা করে।

Related Articles