রাজ্যের খবর

আজও বেঁচে গোপাল ভাড়ের বংশধররা! কোথায় আছেন তারা?

Are the descendants of Gopal Bhader still alive today? Where are they?

Truth Of Bengal: মাধব দেবনাথ, নদিয়া: নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভায় মূল আকর্ষণ গোপাল ভাঁড়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং গোপাল ভাঁড়কে নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে। বহু মজার মজার গল্প। ছোট বয়সে গোপাল ভাঁড়ের গল্প পড়েননি এমন মানুষ বোধহয় খুব কমই আছেন। গোপাল ভাঁড়কেকে নিয়ে নাটক, গল্প, টিভি সিরিয়াল, সিনেমা সবই হয়েছে। তার চালাকি বুদ্ধি আর হাস্যরসিকতা মানুষকে আনন্দ দিয়েছে। গোপাল ভাঁড় সর্বজনীন বাঙালির। বিশ্বের যে প্রান্তেই বাঙালি বসবাস করেন না কেন তাদের কাছে গোপাল ভাঁড় এক অনন্য চরিত্র। গোপাল ভাঁড় কি সত্যিই বইয়ের গল্পের চরিত্র? নাকি সত্যিকারের রক্ত মাংসের মানুষ ছিলেন? সেই উত্তর খুঁজতেই এই প্রতিবেদন।

উঠছে প্রশ্ন তবে আদৌ কি গোপাল ভাঁড় ছিলেন বা থাকতেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। আর এইসব প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিন্ন মত। এই প্রশ্নের জল্পনা উড়িয়ে কৃষ্ণনগর পৌরসভার কাউন্সিলর অসিত কুমার সাহার দাবি, গোপাল ভাঁড় ছিলেন নদিয়াতেই। তার মতে ১৭২৫ খ্রিস্টাব্দে সতীশ চন্দ্র মোড়লের বাড়িতে থাকতেন গোপাল ভাঁড়ের পরিবার। সেই সময় সতীশ চন্দ্র মোড়ল ছিলেন আড়াই হাজার বিঘার জমির মালিক। জানা গেছে নদিয়ার কৃষ্ণনগর ঘূর্ণিতে তখন হিন্দু ব্রাহ্মণ ও মুসলিম সম্প্রদায় নিয়ে মোট ২০০ টি পরিবার ছিল।

অসিত কুমার সাহার দাবি, গোপাল ভাঁড় ছিলেন খুব শান্ত প্রকৃতির, তবে তিনি ব্রাহ্মণদের অন্যায় কাজকর্মের বিরুদ্ধে নির্বিকার থাকতেন না, প্রতিবাদ করতেন। গোপালের বাবার মৃত্যুর পর ব্রাহ্মণদের সঙ্গে এক হয়ে এলাকার মাতব্বররা গোপালের মাকে সহমরনে যাবার হুকুম দেয়। এটা ভাবতে পারেনি গোপাল। আর এই বিচার চাইতেই রাজবাড়িতে যান গোপাল। মহারাজা কৃষ্ণ চন্দ্র মনে মনে বুঝলেন এই বালকটি হবে একদিন প্রতিবাদী কন্ঠ। এরপরই পরলোক গমন বাবার শ্রাদ্ধের জন্য অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন এবং গোপালের পরিবারের পাশে দাঁড়ান।

শুধু তাই নয়, রাজবাড়িতেই কাজের ব্যবস্থা করে দেন গোপালের। তবে বর্তমানে গোপাল ভাঁড় না থাকলেও গোপাল ভাঁড়ের পরিবার রয়েছে হুগলি জেলার খানাকুলে, এমনটাই দাবি অসিত কুমার সাহার। তবে স্থানীয়দের দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে গোপাল ভাঁড়ের সম্বন্ধে জানতে আসেন পর্যটক, কিছু না জানতে পেরে হতাশায় ফিরে যান তারা। তবে কৃষ্ণনগরে গোপাল ভাঁড়ের কোন অস্তিত্ব না থাকলেও কৃষ্ণনগর করিমপুর রাজ্য সড়কের ধারে কৃষ্ণনগর গোডাউন পাড়া মোড় এলাকায় রয়েছে একটি গোপাল ভাঁড়ের আবক্ষ মূর্তি।

সেই মূর্তি স্থাপন করেছিলেন কাউন্সিলর অসিতকুমার সাহা। বর্তমানে গোপাল ভাঁড়ের একটি আবক্ষ মূর্তি ছাড়া গোটা কৃষ্ণনগর শহরে বিলুপ্তপ্রায় গোপাল ভাঁড়। কিন্তু ইতিহাস জুড়ে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়ের কতই না গল্প এখনো রয়ে গেছে। রাজবাড়ি থাকলেও নেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। সাথে সাথে অস্তিত্ব হারিয়ে গেছে গোপাল ভাঁড়ের।

Related Articles