The Truth of Bengal: হ্যাঁ এটাই বাস্তব চিত্র এই রাজ্যে। শুধু মুখে অভিযোগ জানানোই নয় একেবারে তথ্য দিয়ে অভিযোগ জানালো বিজেপি। জাতীয় নির্বাচন কমিশন যখন গোটা দেশে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করতে চলেছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ঠিক তখনই পশ্চিমবঙ্গে এই ঘটনা রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে সকলের কাছে। দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো যখন ভোটার তালিকা নিয়ে বড় বড় বুলি আওড়ায় তখন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে রীতিমতো রাজ্যের মুখ পোড়াচ্ছে গোটা দেশের কাছে দাবি বিজেপি। পাশাপাশি শাসক দল একাধিক বার আঙ্গুল তুলেছিলেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দিকে। বি এল ও অর্থাৎ বুথ লেভেল অফিসার, জেলাশাসক এই কাজের জন্য নিয়োগ করেন নিজে এই পদাধিকারীকে। ভোটার লিস্টে নাম তোলা মানে দেশের নাগরিকত্বের প্রথম পরিচয় পত্র হাতে পাওয়া। সেখানে কিভাবে একজন ঢাকি কে নিয়োগ করা হলো সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। শুক্রবার বিজেপির পক্ষ থেকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের কাছে গিয়ে লিখিতভাবে তথ্য সহকারে এই অভিযোগ জানায়। খোদ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হাতে এই তথ্য পেয়ে রীতিমতো হতবাক।
কিভাবে এই ঘটনা ঘটলো তার সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসককে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরএজ আফতাব জানান প্রতিদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রত্যেক জেলার জেলা শাসক তথা নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে পাশাপাশি প্রতিমুহূর্তের সব তথ্য আদান প্রদান করা হচ্ছে তারপরেও কিভাবে এই ঘটনা ঘটলো সেই সম্পর্কে তিনি একেবারেই অবগত নন। পাশাপাশি তিনি জানান কেবলমাত্র ভিডিও কনফারেন্স করেই প্রতিদিন ক্ষান্ত থাকছেন না তিনি ও তার দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকেরা, রীতিমতো প্রত্যেক জেলায় গিয়ে সরজমিনে কাজ খতিয়ে দেখছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরের সব কর্তারাই। জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে অভিযোগ জমা পড়েছিল এই রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে। অনেক বেশি মৃত ভোটার এবং ভুয়ো ভোটার নিয়ে। এরপর থেকেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন দফায় দফায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করে।
কেবলমাত্র বৈঠকেই থেমে থাকেনি জাতীয় নির্বাচন কমিশন, রীতিমতো করা পদক্ষেপের কথাও বলেছিল কমিশন এই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ও বাকি সব কর্তাদের। পাশাপাশি ইআরও দের দফায় দফায় প্রশিক্ষণ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করার জন্য। যদিও নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর তাঁদের নির্দিষ্ট একটি তালিকা আছে, সেখানে পরিষ্কার বলা আছে কারা হতে পারবেন এই বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও। কিন্তু সেসবকে তোয়াক্কা না করেই রাজ্য প্রশাসন কি করে একজন বি এল ও পদে একজন ঢাকীকে নিয়োগ করলো সেই নিয়েই রীতিমতো বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গেছে জাতীয় নির্বাচন।এতোকিছু করার পরেও এবার এমন এক বলদ ধরা পড়লো যা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এই প্রথমবার। প্রতিবছরই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রাজ্যে ভোটারের সংখ্যা, রাজ্য প্রশাসন যদি একটু সজাগ না হয় তাহলে আগামী দিনে ভোটার তালিকায় যে কত বড় ফাঁক থেকে যাবে যার পরিণাম একজন বুথ লেভেল অফিসার হবেন ঢাকি। আদপে এই সমস্যার সমাধান কি হবে নাকি ঢাকির ঢাক বাজানোর মধ্যে দিয়েই তৈরি হবে ভোটার তালিকা?