Truth Of Bengal: আইপিএলের ম্যাচ শুরু হয়েছিল ধর্মশালা স্টেডিয়ামে। এই ধর্মশালা থেকে পঁচাশি কিলোমিটার দূরে পাঠানকোট। ভারত-পাক উত্তেজনা আবহের মধ্যে এই ম্যাচ চলছিল। হঠাৎ করেই পাক সীমান্ত থেকে পাকিস্তানের ড্রোন উড়তে শুরু করে। সেই সময় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ ধর্মশালা স্টেডিয়ামে আইপিএল ম্যাচ দেখছেন। এই স্টেডিয়ামে যদি পাক হামলার ঘটনা ঘটে মৃত্যুর সমাধিতে পরিণত হবে এমন আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী সদাসতর্ক। তবে কোন ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন। খেলা চলাকালীন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মাঝপথে ম্যাচ বন্ধ করার। এক এক করে নিভিয়ে ফেলা হয় স্টেডিয়ামের ফ্ল্যাড লাইট। সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল। বললেন, আতঙ্কিত না হয়েই আমাদের ২৫,০০০ মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়েছে। তিনি জানালেন, আমাদের প্রথম কাজ ছিল দর্শকদের নিরাপদে স্টেডিয়াম থেকে বের করানোর। কারণ পাক ড্রোন হামলার ঘটনাস্থল এই স্টেডিয়াম থেকে মাত্র ৮৫ কিলোমিটার দূরে। এ ক্রিকেট কর্তা বলেন, ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে তার ‘সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিন’গুলির মধ্যে এই দিনটি তিনি চিরকাল মনে রাখবেন।
The IPL Chairman is asking the crowd to leave the stadium.
In hindsight, it is only because of his influence that Punjab matches are being held in Dharamshala instead of Mohali or New Chandigarh
pic.twitter.com/786zgmt6mb— Ragav 𝕏 (@ragav_x) May 8, 2025
ধুমালা বলেন, এই ২৫,০০০ লোককে সুশৃঙ্খলভাবে সরিয়ে নেওয়ার তদারকি করতে হয়েছিল এবং নিশ্চিত করতে হয়েছিল যে পরিস্থিতির পরিবর্তনের ফলে খেলোয়াড়রা যাতে প্রভাবিত না হয়। পাঠানকোট (ধর্মশালা থেকে ৮৫ কিলোমিটার) এবং জম্মু (১৯৭ কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে) পাকিস্তানের ড্রোন হামলার শিকার হওয়ার পর ফ্লাডলাইটগুলি ম্লান করে শেষ পর্যন্ত নিভিয়ে দেওয়া হয় এবং একটি ব্ল্যাকআউট প্রোটোকল কার্যকর হয়।
ফ্ল্যাটলাইট বন্ধ করা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে জানেও কোন বিভ্রান্তি না ছাড়ায় তার নিশ্চিত করা হয়। প্রথমেই ব্ল্যাকআউট ঘোষনা করলে দর্শকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যেতে পারত। তাতে করে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যেত। তাই বিশাল জনতাকে সামলাতে যান্ত্রিক ত্রুটিকে দায়ী করা হয়েছিল প্রথমে। বিশাল জনতাকে ফ্লাডলাইট বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা যথাযথভাবে করা হয়েছিল। প্রথমে কারিগরি ত্রুটির জন্য এটিকে দায়ী করা হয়েছিল, যাতে সমবেত ভক্তরা আতঙ্কিত না হন। ফ্ল্যাড লাইট বন্ধ করা এবং দর্শকদের আসন ছেড়ে চলে যাওয়ার অনুরোধ করা হলেও মানুষ সেখান থেকে যেতে চাইছিল না। ধুমাল বলেন, প্রথমে প্যানিক ছড়িয়ে গেলে পদপৃষ্ঠের আশঙ্কা থেকে যেত। সচেতনতার মধ্য দিয়ে দর্শকদের স্টেডিয়াম থেকে বের করা হয়। হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় পুলিশ আধ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর সাহসের সাথে কাজটি সম্পন্ন করেছিলেন।
আইপিএলের এই ম্যাচটি সেই সময় যথেষ্টই উত্তেজনার মধ্য দিয়ে চলছিল। পাঞ্জাব যেভাবে ব্যাট করছিল তাতে ম্যাচটি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। স্টেডিয়ামে দর্শকরা টগবগ করে ফুটছিলেন। সেই সময় দর্শকদের মাঠ থেকে বের করে আনাটা যথেষ্টই কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং ছিল। স্থানীয় পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া পুরো অভিযান সম্ভব হত না। তারা দুর্দান্ত কাজ করেছে, জানালেন ধুমাল।
এই ক্রিকেট কর্তাকে স্টেডিয়াম থেকে লোকজনকে বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করতে দেখা যায়। একটি গ্যালারিতে পাঞ্জাব কিংসের সহ-মালিক প্রীতি জিনতার পাশে দাঁড়িয়ে দর্শকদের মাঠ ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
ধর্মশালা হল পাঞ্জাব ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় হোম বেস। ২২শে এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যে শুক্রবার আইপিএল এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়। আইপিএল চেয়ারম্যান হিসেবে তার মেয়াদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং রাত কি ছিল? আসলে তা নয়, ধুমাল বলেন। ‘কোভিড-১৯ চলাকালীন আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যখন টুর্নামেন্ট মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ ছিল ভিন্ন কারণ নিরাপত্তা প্রোটোকলের কারণে আমাদের একটি লাইভ খেলা বন্ধ করতে হয়েছিল।’ সবকিছু দ্রুততম সময়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল।’ কিন্তু আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের প্রচুর জনতাও ছিল। ধুমাল বলেন, নির্দেশাবলী অনুসরণকারী অত্যন্ত অনুগত সমাবেশের সাথে কৃতিত্ব ভাগ করে নেওয়ার জন্য।