Truth of Bengal: প্রতিদিন ‘গুড মর্নিং’ বার্তায় ‘প্রিন্সেস’ এবং ‘গার্ল’ বলে সম্বোধন বসের। মনোমতো জবাব না পেলে তাঁকে কর্মক্ষেত্রে কোণঠাসা করা হয়। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে এমনই অবাঞ্ছিত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন এক মহিলা। বসের পাঠানো সব বার্তা তুলে ধরে ওই মহিলা জানিয়েছেন, অনেকদিন ধরে তাঁর সঙ্গে কী করে আসছেন তিনি। চাকরি হারানোর ভয় বা প্রতিশোধের সম্মুখীন না হওয়ার জন্য অনেকে এমন বিষয় সামনে আনতে চান না। ফলে এমন ঘটনা বেড়ে চলে। ওই মহিলা লিখেছেন, কারও সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে অভিযোগ দায়ের করা উচিত। যাতে এই ঘটনা আটকানো যায়।
মহিলা লিখেছেন, “আমার বস আমাকে প্রতিদিন সকালে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠান। যেখানে তিনি আমাকে ‘প্রিন্সেস’ ও ‘গার্ল’ বলে সম্বোধন করেন। গত এক বছর ধরে তিনি এই আচরণ করে আসছেন। উপেক্ষা করলে তিনি অফিসে আমাকে কোণঠাসা করেন। তিনি আমাকে সরাসরি কোনও কাজ দিতেন না।’ বসের এমন আচরণ তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে বলে লিখেছেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যমে নিজের এমন খারাপ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতেই নানা জন তাঁকে নানা পরামর্শ দেন। কেউ লেখেন, বার্তাগুলির স্ক্রিনশটগুলি সংরক্ষণ করে সংস্থার এইচআর-এর কাছে রিপোর্ট করতে। কেউ পুলিশ জানানোর পরামর্শ দেন। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনের অধীনেও অভিযোগ দায়ের করতে বলেন অনেকে।
দেশে প্রিভেনশন অফ সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট আইনের অধীনে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির কড়া আইন আছে। এই ধরনের অভিযোগ জানানোর জন্য অনেক কোম্পানিতে বিশেষ বিভাগ আছে। কর্মক্ষেত্র মহিলাদের জন্য নিরাপদ স্থান করার জন্য কড়া আইন থাকলেও অনেক সময় বসের এমন আচরণের শিকার হন মহিলারা।
অচেনা কোনও মহিলাকে যদি ‘ডার্লিং’ বলে সম্বোধন করলে আইনি প্যাঁচে জড়িয়ে পড়তে হতে পারে। অচেনা কোনও মহিলার উদ্দেশে ‘ডার্লিং’ শব্দটি ব্যবহার করা একটি ফৌজদারি অপরাধ৷ তা যৌন হেনস্থার শামিল৷ সম্প্রতি এমনই পর্যবেক্ষণ ছিল কলকাতা হাইকোর্টের৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির 354-এ ধারায় (একজন মহিলার সম্ভ্রম নষ্ট) এবং 509 ধারার অধীনে একে একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে৷ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত হাইকোর্টের পোর্ট ব্লেয়ার বেঞ্চের শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ মতো ওই মহিলা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেন। কারণ তাঁর বসের ‘প্রিন্সেস’ এবং ‘গার্ল’ বলে সম্বোধন একইরকম অভিযোগ। যেখানে মহিলার সম্মানহানি হয়েছে।