
The Truth of Bengal: একদিনের ছুটি কাটাতে কিন্তু মাঝে মধ্যেই ইচ্ছে করে আমাদের প্রত্যেকের. কিন্তু সব সময় যে বেশ টাকা পয়সা হাতে থাকবে এমন নয়. আর আপনার সাথেও যদি এমনই হয়ে থাকে যে সময় কম আর বাজেটও কম তেমন হলে কাছে ধারে কোথাও কিন্তু যাওয়াই যায়. তেমনই একটি জায়গা হল হুগলী জেলার বাঁশবেড়ীয়ার হংসেশ্বরী মন্দির. এই মন্দিরে যেমন আছে শান্তি, তেমনই আছে ইতিহাসের গন্ধ মাখানো. জানা যায়, রাজা রামেশ্বর রায়ের প্রপৌত্র নৃসিংহদেব রায় বাঁশবেড়িয়া হংসেশ্বরী মন্দির নির্মাণকার্য শুরু করেন। এরপর সময় নিজের মত বয়ে যায়. বদলে যায় অনেককিছু. পরবর্তীকালে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরে ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়।
কিন্তু ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরের কাজ অসম্পূর্ণ রেখে নৃসিংহদেব মারা যান। ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে নৃসিংহদেবের দ্বিতীয় স্ত্রী রাণী শঙ্করী অসমাপ্ত কাজটি সম্পন্ন করেন। মন্দিরটি তৈরীর জন্য উত্তর প্রদেশের চুনার থেকে পাথর এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে কারিগরদের নিয়ে আসা হয়। উত্তর রাজস্থানের শেখাওয়াতি হাভেলি নির্মাণশৈলীর ধারা লক্ষ্য করে এই মন্দিরটি স্থাপত্য কারুকার্য করা হয়। প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয় মন্দির নির্মাণে। ৭০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দক্ষিণমুখী এই হংসেশ্বরী মন্দির. পাঁচতলা মন্দিরটির আটকোণে ৮টি, মধ্যস্থলে ৪টি, কেন্দ্রস্থলে ১টি অর্থাৎ মোট ১৩টি চূড়া রয়েছে। মধ্যস্থলে চূড়ার নিম্নাংশের প্রকোষ্ঠে একটি সাদা রঙের শিবলিঙ্গ রয়েছে। প্রত্যেক চূড়ার শীর্ষভাগ মোচাকৃতি পদ্মকোরকরূপী। এখানে তন্ত্র সাধনার ষটচক্রভেদের তত্ত্বকে অনুসরণ করে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়।
মন্দিরের গর্ভ গৃহের মধ্যে আছে সহস্রদল নীলপদ্মের, এর ওপরে আছে অষ্টদল পদ্ম। তার ঠিক উপরে ত্রিকোণ বেদীর রয়েছেন মহাকাল। মহাকালের হৃদয় থেকে উঠে আসা দ্বাদশ দল পদ্মের ওপর এক পা মুড়ে কুণ্ডলিনী শক্তিরূপে বিরাজ করছেন দেবী হংসেশ্বরী মাতা. হংসেশ্বরী দেবী মূর্তিটি নিম কাঠ ও নীল বর্ণের প্রতিমাটি দ্বারা নির্মিত এবং মহাকাল মূর্তি পাথরের তৈরি। সারাবছর হংসেশ্বরী মাতা দক্ষিণা কালিকা মতে পূজিত হলেও এই একটি দিন তান্ত্রিক মতে মায়েরপুজো করা হয়। হুগলী জেলার বাঁশবেড়ীয়ার হংসেশ্বরী মন্দিররে আসতে হলে আপনাকে হাওড়া থেকে কাটোয়া লোকালে চেপে বাঁশবেড়িয়া স্টেশনে নেমে সেখান থেকে টোটো করে মন্দির যেতে হবে. এছাড়াও হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল পৌঁছে ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে মিনিবাস বা অটো করেও পৌঁছনো যায়।