
Truth of Bengal: দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ুর প্রাচীন একটি জনপদ হল ময়দা। এখানেই ৪০০ বছরের ও বেশি সময় ধরে পূজিত হচ্ছেন ময়দানবের আরাধ্য দেবী পাতালভেদী দক্ষিণাকালী ময়দানবেশ্বরী। প্রতিদিনের পাশাপাশি প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভিড় হয় মায়ের এই মন্দির চত্বরে। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে কালী নিয়ে নানা গল্প। কালীর নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কৃষ্ণ বর্ণ বা নীল বর্ণের দেবী।
তাঁকে কখনও দেখা যায় উগ্র রূপে আবার কখনও দেখা যায় স্নিগ্ধ রূপে। আর সেই কালীর রূপ দেখতেই বছরের পর বছর ধরে নিজেদের মনস্কামনা নিয়ে ছুটে আসেন বহু ভক্ত। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে পৌঁছে যেতে হবে বহড়ু স্টেশন। সেখান থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার এগোলেই দেখা যাবে ময়দা গ্রাম। আর এই ময়দা গ্রামেই রয়েছে জাগ্রত পাতালভেদী কালীমূর্তি। মায়ের এই মন্দির বহু প্রাচীন।
মন্দিরের মধ্যে নেই কোন মূর্তি। নদীগর্ভ থেকে প্রাপ্ত শিলাকে চতুষ্কোণ গহ্বরে দেবীর প্রতীক হিসাবে রেখে পুজো করা হয়। দক্ষিণা কালীরূপে পুজো করা হয় এই শীলকে। এই কালী স্বয়ম্ভু নামেও পরিচিত অনেকের কাছে। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে এক এক মানুষের এক এক রকম মতামত। শোনা যায় ময়দানবের আরাধ্য দেবী পাতালভেদী দক্ষিণাকালী ময়দানবেশ্বরী ৷ ময়দা গ্রামে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ১১৭৬ বঙ্গাব্দে।
সাবর্ণ রায়চৌধুরিরা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অনেকের মতে এই রায়চৌধুরি বাড়ির একজন সদস্য গঙ্গার বুকে বজরা নিয়ে ঘুরতে বের হন সেই সময় তিনি দেখতে পান দূরের বকুল গাছের ডালে দোল খাচ্ছে এক ছোট্ট মেয়ে। কিন্তু সেই সময় মাঝিরা জানাই ওই মেয়ে ডাইনি। তাই ওকে কেউ ধরতে পারেনা। আর তারপরেই ওই রাতেই রায়চৌধুরী বাড়ির সেই সদস্যের স্বপ্নে আসে ওই বালিকা।
নিজেকে দক্ষিণা কালী বলে পরিচয় দেয় সে। স্বপ্নের মধ্যে ওই বালিকা জানায় বকুল গাছের গোড়ায় যে মাটির স্তূপ আছে সেটা খুঁড়লেই পাওয়া যাবে এক শিলা খণ্ড । আর সেখানেই মন্দির তৈরি করে পুজো করতে হবে সেই শিলা খণ্ডকে। আর তারপরেই রায়চৌধুরীদের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয় এই মন্দির।
এই মন্দিরে কেবল যে কালীপূজোর দিন ভিড় হয় এমনটা নয়, বছরের যে কোন সময় এখানে ভক্তদের আনাগোনা প্রায় লেগেই থাকে। শনি আর মঙ্গলবার মন্দির চত্বরে ভক্ত সমাগম চোখে পড়ার মতো। তাই যদি কোন কারণে আপনার মন চঞ্চল হয়ে আছে কিংবা মনের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে কোন সুপ্ত বাসনা তাহলে অবশ্যই এই পাতালভেদী মায়ের কাছে পৌঁছে যেতে হবে।