হাতে রয়েছে দুদিনের ছুটি? কোথায় যাবেন? ঘুরে আসুন প্রাচীন সর্বমঙ্গলা মন্দির থেকে…
Sarvamangala Temple in Bardhman City

The Truth Of Bengal: আজকাল তো ছুটি মানেই বেরিয়ে পরা, তা সে যেখানেই বা যতদূর হোক। আর এই কাজের ব্যস্ততার মাঝে যদি হুট করে দুদিনের ছুটি পাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু অনেক সময় কম সময়ে ঘুরে আসার জন্য জায়গা ঠিক করে ওঠা হয়না। এবার আপনাদের জন্য রইল এক নতুন জায়গায় তথ্য। যারা প্রাচীন মন্দির ঘুরতে ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির আদর্শ জায়গা।
বাংলায় সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য তীর্থক্ষেত্র। তাই দু এক দিনের জন্য ছুটি পেলে এবার ঘুরে আসুন বর্ধমান শহরের সর্বমঙ্গলা মন্দির থেকে। ১৭০২ সালে মহারাজ কীর্তিচাঁদ এই মন্দির নির্মাণ করেন। এই দুর্গামূর্তি অষ্টদশভুজা । প্রথম নবরত্ন স্তাপত্য রীতিতে তৈরি এই মন্দির।
বরাবরই বাংলা শক্তিসাধনার কেন্দ্র । একের পর এক তীর্থক্ষেত্র রয়েছে এই বাংলায়। এই সব তীর্থক্ষেত্রে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে ভক্তরা। এই রাজ্যের এমনই এক তীর্থক্ষেত্র বর্ধমান শহরের সর্বমঙ্গলা মন্দির। অত্যন্ত প্রাচীন এই মন্দির। কথিত আছে প্রায় ৩০০ বছর আগে বর্ধমানের উত্তরে বাহির সর্বমঙ্গলা ছিল বাগদিবর্গের বসবাস ক্ষেত্র। সেখানে ছিল প্রচুর ধানক্ষেত ও পুকুর। সেই সময় জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে পেয়েছিলেন এক শিলামূর্তি । সেই পাথরের পিছনে বিভিন্ন জলজ প্রাণী যেমন শামুক, কাঁকড়া, গুগুলি প্রভৃতি থেঁত করা হত। তখনকার দিনে শামুক গুগলির খোলা পুড়িয়ে চুন তৈরি করা হত। তাই একদিন শামুক গুগলির খোলস পোড়াতে গিয়ে ভুলবশত তার সাথে চলে যায় এই শিলামূর্তি। সব পুড়ে গেলেও শিলামূর্তির কোন ক্ষতি হয়নি। সেদিনই রাতে রাজা স্বপ্নাদেশ পান । সেই স্বপ্নদেশে সর্বমঙ্গলা রাজাকে বলেন দামোদর নদের তীরে চুনের ভাটায় শিলা রূপে তিনি আছেন। রাজা সেখান থেকে এই শিলা মূর্তি তুলে আনেন এবং মন্দির নির্মাণ করে সেখানে শিলা মূর্তি পুজোর বন্দোবস্ত করেন।
এটা তো গেল মন্দিরের কিছু অজানা ইতিহাস এবার আসা যাক মন্দিরের বিবরণে। এখানে গেলেই আপনি দেখতে পাবেন মন্দিরটির পূর্ব দিকে রয়েছে প্রধান প্রবেশ দ্বার। প্রবেশ দ্বারের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন দু পাশে দাঁড়িয়ে শিব মন্দির। দুটি মন্দিরের ভিতরে রয়েছে কালো পাথরের শিবলিঙ্গ। একটির নাম ইন্দ্রেশ্বর ও অন্য শিব মন্দিরটির নাম চন্দ্রেশ্বর শিব মন্দির। শিবমন্দির গুলি নির্মিত সুন্দর টেরাকোটার কাজ দিয়ে। সর্বমঙ্গলা মন্দিরে দুর্গা অষ্ঠাদশভুজা। নররত্ন স্তাপত্য রীতিতে তৈরি করা এই মন্দির খুবই জনপ্রিয়। এই মন্দিরটিকে ৫১ সতীপিঠের একটি বলে মনে করেন অনেকেই। তবে বর্তমানে মন্দিরে কোন পশুবলী হয়না।
ভাবছেন কিভাবে যাবেন এই মন্দির দর্শনে? হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে চলে যান বর্ধমানে। সেখান থেকে টোটো বা গাড়ি করে পৌঁছে যান এই মন্দিরে। বর্ধমানে থাকার জন্য পেয়ে যাবেন অসংখ্য হোটেল, লজ তাই রাত্রি যাপনের ক্ষেত্রে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
Free Access