
The Truth of Bengal: পাথরার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার নবাব আলিবর্দি খাঁর ইতিহাস। বহু আগে পাথরা গ্রাম পরিচিত ছিল রত্নচক নামে । নবাব আলিবর্দী খাঁ বিদ্যানন্দ ঘোষালকে নিযুক্ত করেছিলেন রত্নাচক পরগণার কর আদায়ের জন্য। বিদ্যানন্দ ঘোষাল কর আদায়ের পাশাপাশি কংসাবতী নদীর তীরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এক মন্দির। কিন্তু মন্দির প্রতিষ্ঠা করে বিদ্যানন্দ ঘোষালের সুনাম ছড়ালেও নবাব আলিবর্দি খাঁ মটেই তাঁর কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন না । কারন রাজস্বের টাকা তিনি ঠিকঠাক না জমা দিয়ে, তা মন্দির নির্মাণে ব্যয় করেছিলেন। নবাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠান ও শেষপর্যন্ত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ।
কথিত আছে, হাতির দ্বারা পদপিষ্ট করে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় । কিন্তু হাতি তাঁর শরীরে পা তুলতে গিয়েও সরিয়ে নেয়, তাই থেকে গ্রামের নাম ‘পা উতরা’, ক্রমে পাথরা হয় । পাথরা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মোট ৩৪টি টেরাকোটার মন্দির। এখানে নবরত্ন মন্দির বেশ পরিচিত। দুর্গাদালান, রাসমঞ্চ, জমিদারের কাছারি বাড়ির সহ একাধিক ঐতিহাসিক নিদর্শন আছে পাথরায় । যদিও ২৮টি মন্দির আর্কিওলজিকাল সার্ভে নিয়েছে। তার মধ্যে ১৮টি মন্দির সংস্কার করা হয়েছে। পাথরায় ১৭০০-১৮০০ শতাব্দীতে মন্দির তৈরি শুরু হয়।পাথরায় গেলে অবশ্যই দেখবেন কয়েকটি মন্দিরের গায়ে ১৭২১, ১৭৪৯ শতাব্দ খোদাই করা রয়েছে। পাথরা মানেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যের পীঠস্থান।
কীভাবে যাবেন ?
হাওড়া স্টেশন থেকে মেদিনীপুর স্টেশন যাওয়ার জন্য বহু লোকাল ট্রেন ও একপ্রেস ট্রেন আছে। পশ্চিম মেদিনীপুর যেতে সময় লাগবে ২ থেকে ২:৩০ ঘণ্টা । আর ট্রেন থেকে নেমে মাত্র ১৮ কিমি দূরে গেলেই মিলবে পাথরার ঐতিহাসিক নিদর্শন। এছাড়াও আপনি সড়ক পথেও যেতে পারেন পাথরায়।
কোথায় থাকবেন ?
পর্যটকদের সুবিধার্থে পাথরায় চালু হয়েছে হোম স্টে। এ ছাড়াও আপনি মেদনিপুরে এসেও অনেক হোটেল পাবেন। সেখানেও রাত্রিবাস করতে পারেন। তবে আর দেরি না করে সস্তায় ঘুরে আসুন কলকাতার অদূরের এই মন্দির ঘেরা গ্রাম থেকে।