
The Truth of Bengal: সময় বের করে অনেকেই ঘুরতে যেতে চান এমন কোনও জায়গায় যেখানে অন্যরকম শোভা রয়েছে। নিরিবিলি প্রান্তরে ডুব দিয়ে তাঁরা ভুলে থাকতে চান, প্রতিদিনের ব্যস্ত কোলাহল থেকে। তাঁদের কাছে অবশ্যই পছন্দের হতে পারে অরুণাচলের তাওয়াং-এর নুরনাং জলপ্রপাতের সৌন্দর্য। এছাড়াও এখানকার চারপাশের নৈস্বর্গিক দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের মন ভরিয়ে তোলে। তাই চলুন আমরাও আজকের ভ্রমণ কথায় দেখে নিই নুরনাং-এর অপার সৌন্দর্য।সেভেন সিস্টার্সের অন্যতম অরুণাচলপ্রদেশ। পাহাড়ি এলাকার পরতে পরতে রয়েছে প্রাণবন্ত নানা এলাকা। এই অনাবিল প্রান্তরে প্রতিদিন ছুটে যায় হাজার হাজার মানুষ।যাঁরা সেখানে গিয়ে সৌন্দর্যের সম্ভার দেখে চোখের খিদে মেটান।
সেরকমই এখানকার এক বিশেষ আকর্ষণীয় জায়গা হল নুরানাং জলপ্রপাত। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং জেলার ১০০ ফিট জলপ্রপাত। দেশের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাতগুলির মধ্যে এটি একটি। তাওয়াং রোডের জং শহরের কাছেই অবস্থিত এই জলপ্রপাতটি। শহরের নামানুসারেই এই জলপ্রপাতের নামকরণ হয়েছে। কথিত আছে, নুরানাং নামটি এসেছে নুরা নামের এক মনপা আদিবাসী মেয়ের নাম থেকে। ১৯৬২ সালে ভারত চিন যুদ্ধে জশবন্ত সিং রাওয়াত নামে এক ভারতীয় সৈনিক চিনা সৈন্যের হাতে ধরা পড়ে যেতেন। মনপা কন্যা নুরার সাহায্যে জশবন্ত সিং চিনা সেনাবাহিনীকে এড়িয়ে গা ঢাকা দিতে সক্ষম হন। নুরার সাহসকিতার কথা মাথায় রেখেই স্থানীয়রা জলপ্রাপাতের নাম দেন নুরানাং। এই জলপ্রপাতের দৃশ্য আপনারা অবশ্যই দেখেছেন রূপোলি পর্দায়। বলিউডের একের পর এক ফিল্মে এই অসম্ভব সুন্দর এলাকা ফ্রেমবন্দি হয়েছে।
জং শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই জলপ্রপাত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬হাজার ফিট ওপরে অবস্থিত এই জলপ্রপাত। ভাবছেন কিভাবে যাবেন ? এখানে যেতে গেলে আপনাকে লোকাল গাড়ি নেওয়াই বাঞ্চনীয়। যাঁরা পাহাড়ি পথে ড্রাইভিং করতে ভালবাসেন তাঁরা এই এখানে গাড়ি চালিয়ে মজা পাবেন। একই সঙ্গে এই জলপ্রপাত ছাড়াও অন্যত্র যাওয়ার জন্য নিতে পারেন ট্রাক্সি। আবার ট্যুর প্যাকেজ সিস্টেমে গাড়ি ভাড়া করতে পারেন। জলপ্রপাতের কাছে রয়েছে একটি প্রাচীন গুহা। তবে, বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে যদিও জলপ্রপাত পর্যন্ত হাঁটা একটু চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার।
অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের যে কোনও অঞ্চল ঘুরে দেখার জন্য অনুমতি প্রয়োজন। ইনার লাইন পারমিটের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আগে থেকেই আবেদন করতে হয়। অরুণাচল সরকারের অনুমতি পত্র মেলে নয়া দিল্লি , কলকাতা, গুয়াহাটি এবং শিলং থেকে। অনলাইনেও অনুমতি পত্রের জন্য আবেদন করা যায়। তাই মার্চ মাসে যাঁরা যাবেন তাঁরা এখন থেকেই ট্রাই করুন এবং ব্যাগপত্র গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন নুরনাং-এর জলে গা ভাসাতে।