ভ্রমণ

ভারতেই রয়েছে এক রহস্যময় পবিত্র অরণ্য, এখান থেকে গাছের পাতাও নিয়ে আসা যায় না

Meghalaya Mawphlang Trip

The Truth of Bengal: একটি অরণ্য, বলা ভালো ঘন অরণ্য, এখানে প্রবেশ করলেই অনুভব করা যায়, কে যেন শ্বাস নিচ্ছে। জঙ্গলের মধ্যে সূর্যের আলো অতি ক্ষীণ, অরণ্যের সরু চোরাপথ ধরে হাঁটলে বোঝা যায়, এক এক সময় কিছু ঠান্ডা হিমেল বাতাস কানের পাশ দিয়ে বয়ে যায়। কখনও কখনও কুহেলি মেশা জোলো হাওয়া আচমকা চোখের সামনে যেন থমকে দাঁড়ায়। শিরদাঁড়া বেয়ে একটা ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়।  প্রতি পদে মনে যেন, আশে পাশে কেউ যেন আছে, হাওয়ায় মিলে চলছে অরণ্যভূমিতে চারণ করা অনাহুতদের পাশে পাশে।

মেঘালয়ে তিন মূল জাতি, তাঁদের নামেই তিনটি পাহাড় ও তিনটি ক্ষেত্র, খাসি, গাড়ো এবং জয়ন্তীয়া। ইউ-বা-সা-রাইংকিউ, এটি খাসি ভাষা থেকে বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘পবিত্র দেবভূমি।‘ এক রহস্যময় উদ্যান। সারা বিশ্বে খুঁজলে অজস্র পবিত্র ঈশ্বরের ভূমি, দেবভূমির খোঁজ মেলে, ব্যতিক্রম নয় মেঘালয়ের মাওফ্লাঙের জঙ্গল। শিলং থেকে ২৬ কিমি দূরে মৌসিনরাম ‌যাওয়ার পথেই পড়ে, লোককথার এই ঈশ্বরের ভূমি। স্রেফ বিশ্বাস নয়, অনেকেই উপলব্ধী করেছেন এই দেবভূমির অদৃশ্যশক্তিকে। আর সেই রহস্য এখনও অধরা বিজ্ঞানের কাছে।

স্থানীয় উপজাতিদের বিশ্বাস, এই দেবভূমিকে রক্ষা করে চলেছে, অদৃশ্য কোনও এক প্রাণী বা শক্তি। কেউ বলেন বাঘ, কেউবা বলেন সাপ। এই ঈশ্বরের উদ্যানকে ঘিরে বেশ কিছু লৌকিক কাহিনী রয়েছে, স্থানীয় এক ব্যক্তির অভিজ্ঞতা বলছে, একবার তাঁকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাড়া করে, প্রাণ বাঁচাতে এই উদ্যানে ঢুকে পড়ে সে। তাঁর মনে ভয় থাকলেও, সে অনুভব করেছিল, তাঁকে ‌যেন কোনও অদৃশ্য শক্তি ঘিরে রেখেছে অনেকটাই সুরক্ষিত বোধ করছিল।

এই দেব উদ্যানে, বাইরে থেকে কোনও জিনিস এনে ফেলে চলে ‌যাওয়া ‌যায় না। আবার এখানকার কোনও জিনিস নিয়েও ‌যাওয়া ‌যায় না। এই বিধি লঙ্ঘন করলে বিপজ্জনক ফল মেলে। কথায় বলে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহু দূর, বিষয়টি অনেকের কাছে অবৈজ্ঞানিক লাগতেই পারে। কিন্তু একটা বিশ্বাস যদি প্রাচীন জনজাতির অরণ্য সম্পদকে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বাঁচিয়ে রাখে, সেখানে অসুবিধা কোথায়?

Related Articles