
Truth of Bengal: কি না নেই ঝাড়গ্রামে, প্রকৃতি তার সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে এখানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি আপনি চাইলে দেখে জেনে নিতে পারেন আদিবাসীদের শিল্প সংস্কৃতির ইতিহাস। রয়েছে একটি বিশাল বড় সংগ্রহ শালা। শাল বনের জঙ্গলে ঘেরা এই সংগ্রহ শালায় আদিবাসীদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া নানা সামগ্রী যত্ন করে রাখা রয়েছে। চারিদিকে সবুজে ঘেরা বন। কোথাও আবার ছুটে পালাচ্ছে হরিণের দল। অন্যদিক থেকে বেরিয়ে আসছে হাতির দল। না এইগুলি সত্যি করে নয়, এই গুলি তৈরি করে রাখা রয়েছে ঝাড়গ্রামে নির্মীয়মাণ আদিবাসী সংগ্রহশালায়।
এই সংগ্রহশালা ধীরে ধীরে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে পর্যটকদের কাছে। এই সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে ঝাড়গ্রামের বাঁদরভুলায় প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রের কটেজ সংলগ্ন এলাকায়। এই সংগ্রহ শালায় জায়গা করে নিয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের হস্তশিল্প, তাঁতশিল্প এবং আরও নানা কারুকার্য। যে শিল্পগুলি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে সেই শিল্প জায়গা করে নিয়েছে এই সংগ্রহশালায়। জঙ্গলমহলের ইতিহাস জানতে চাইলে পৌঁছে যেতে হয় এই সংগ্রহ শালায়। চারপাশে শালবনের জঙ্গল আর তার মাঝে এই সংগ্রহশালা, দেখলে যেন মনে হয়, কোন এক আদিবাসী গ্রামে হয়তো এসে পড়েছেন আপনি।
আদিবাসীদের ঘরের আদলে তৈরি করা হয়েছে এই সংগ্রহশালা। নীল রঙের দেওয়াল ও সাদা রং দিয়ে দেওয়ালের একাধিক জায়গায় আঁকা রয়েছে নানা ধরনের চিত্র। আদিবাসী মহিলারা হলুদ শাড়ি পড়ে নাচ করছে আর পাশে বাজানো হচ্ছে বাদ্যযন্ত্র, এইরকম স্ট্যাচু ও রয়েছে এই সংগ্রহ শালায়। এমনকি এই সংগ্রহ শালায় রয়েছে একটি গোরুর গাড়ি, ৩ রকমের ধামাসা ও আরও নানান সামগ্রী। রয়েছে মাটির তৈরি হাতি ঘোড়া, যাদের ধর্মীয় রীতি মেনে পুজো করা হয়।
এই সব ছাড়াও এখানে স্থান পেয়েছে বাহা, কুর্মিদের ভাদু, ডাং, মুন্ডারি, পাতা ও শবরদের চ্যাং নৃত্যের ছবি। অতীতে জীবজন্তুদের আক্রমণ ঠেকাতে আদিবাসীরা হাতে রাখতেন তির -ধনুক, বল্লম , টাঙ্গি , ত্রিশূল , দাঁ , হাঁসুয়া সেইগুলো দেখা যায় সংগ্রহ শালায়। এছাড়াও সুন্দর ভাবে সাজানো রয়েছে ছৌ নৃত্যের নানা মুখোশ, রয়েছে খেজুর পাতার চাটাই, তালপাতার পাখা, ঢেঁকি। কিভাবে পৌঁছবেন? হাওড়া থেকে ট্রেনে করে পৌঁছে যেতে পারবেন ঝাড়গ্রাম। এছাড়াও আপনি চাইলে বাসে করেও পৌঁছে যেতে পারেন এই সংগ্রহশালা দর্শনে।