
The Truth of Bengal: অনেকেই লম্বা ছুটিতে কেরালা বেড়াতে যান। কিন্তু জানেন কি? এই রাজ্যের এমন একটি রহস্য রোমাঞ্চে মোড়া জায়গা রয়েছে, যার ঐতিহাসিক মূল্য যেমন রয়েছে, তেমন প্রাকৃতিক মূল্যও। কেরালার ওয়ানাদ জেলায় রয়েছে এমন একটি গাছ, যাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছে চেন দিয়ে। আজ থেকে নয়, প্রায় ৩০০ বছর ধরে। কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে এই গাছকে বেঁধে রাখার পিছনে?
আপনি দেশের চেনা জায়গায় বেড়িয়ে ক্লান্ত, খুঁজে বেড়াচ্ছেন এমন এক অফবিট জায়গা, যেখানে রয়েছে, স্থানীয় গৌরবান্বিত ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের, সঙ্গে রয়েছে রহস্য রোমাঞ্চে মোড়া কাহিনি। তাহলে আপনি অনায়াসে বেড়িয়ে আসতে পারেন কেরালার অফবিট জায়গা ওয়ানাদ। এখানে বেশ কিছু দেখার জায়গা রয়েছে, তবে যে জায়গা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় তা হল, থামারেসেরেই চুরাম নামে একটি জায়গা।
গাছের এক অদ্ভুত জীবন কাহিনী
এখানেই একটি প্রকাণ্ড অশ্বত্থ গাছকে বেঁধে রাখা হয়েছে চেন দিয়ে। কিন্তু এই গভীর জঙ্গলে একটি গাছকে বেঁধে রাখার কারণ কি ? স্থানীয় কিংবদন্তি রয়েছে, সময়টা ১৭০০ থেকে ১৭৫০। ব্রিটিশরা ভারতের আসার পর পাহাড় জঙ্গল কেটে ভারতের বুক চিরে পাকা রাস্তা তৈরি করতে থাকে। বাদ যায়নি কেরালাও। কারণ, কেরালা থেকে মসলা যাতে দ্রুত বন্দরে পৌঁছতে পারে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ। কিন্তু ওয়ানাদের দুর্গম, জঙ্গল ও পাহাড়ের মধ্যে রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা করতে পারছিল না ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়াররা।
সেই সময় পুরস্কার ঘোষণা করা হয়, জঙ্গলের রাস্তা যে বের করবে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। অগত্যা খোঁজ চালিয়ে ইংরেজরা স্থানীয় জনজাতির একটি যুবক করিনথন্ডনের সাহায্য নেয়। পরে করিনথন্ডন জানতে পারে, তাকে ব্যবহার করে জঙ্গল কাটার পরিকল্পনা করছে ইংরেজরা। বিষয়টি জানার পরেই, আপত্তি জানায় সে। করিনথন্ডনের আপত্তির পর, ইংরেজরা তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। কারণ বুঝে যায়, তাকে না মারলে, রাস্তা তৈরি অসম্ভব।
পরে করিথন্ডনকে হত্যা করা হয়, এবং পাহা়ড় জঙ্গল কেটে রাস্তা তৈরি করে ইংরেজরা। স্থানীয় কাহিনী মতে এর পরেই, ওই অঞ্চলে প্রচণ্ড ভূতের উপদ্রব শুরু হয়। ইংরেজদের কাজ বিগড়োতে থাকে। এর পরেই এক পাদরিকে এনে তার পরামর্শ মেনে। একটি অশ্বত্থ গাছে চেন দিয়ে করিথন্ডনের আত্মাকে বেঁধে দেওয়া হয়। তার পর থেকে এই এলাকা শান্ত হয়ে ওঠে। ওয়ানাদের এই অঞ্চল ছাড়াও দেখার মধ্যে রয়েছে, পুকড়া লেক, বানাসুর ড্যাম, সুচিপাড়া ঝরনা,, ফ্যান্টম রক, এডাক্কাল গুহা।
কীভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোরগামী ট্রেন বা ফ্লাইট। ব্যাঙ্গালোর থেকে ওয়ানাদ বাস রয়েছে, চাইলে প্রাইভেট গাড়িও নিতে পারেন।
থাকবেন কোথায়?
একটু রোমাঞ্চকর পরিবেশে, যদি থাকতে চান, তাহলে অনায়াসে এডাক্কাল জঙ্গলের রিসোর্ট বা কেভ রিসোর্টে থাকতে পারেন।