শ্রেয়সদের কাছে নাইটদের লজ্জার হারের দায় নিতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে
Team management must take responsibility for Knights' humiliating loss to Shreyas

Truth Of Bengal: ইন্দুভূষণ রায়, প্রাক্তন ক্রিকেটার: মঙ্গলবার ছিল বাংলা নববর্ষের দিন। যা বাঙালির কাছে একটি অন্যতম বিশেষ দিন বলেই পরিচিত। কিন্তু এই বিশেষ দিনের সন্ধ্যাটা যেমন একেবারেই ভাল কাটেনি নাইট ভক্তদের, ঠিক তেমনই ভাল কাটেনি প্রাক্তন ক্রিকেটার হিসাবে আমারও।
আইপিএল-র ম্যাচে শ্রেয়স আইয়ারদের বিপক্ষে ম্যাচে নাইটরা যেভাবে লজ্জার হার মাথায় নিয়ে মাঠ ছাড়ল, তা দেখে সত্যিই হতবাক হয়ে গিয়েছি। কুড়ি ওভারে ১১২ করলেই ম্যাচটাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। এত অল্প রানেও পঞ্জাবকে আটকে রেখেও ম্যাচ জিততে ব্যর্থ কেকেআর! ৯৫ রানে অল-ডাউন ভাবা যায় না।
ম্যাচ শেষে যখন নাইটদের হারের কারণগুলি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম, তখন চোখের সামনে নাইটদের হারের অনেক কারণগুলিই স্পষ্ট হয়ে গেল। তার মধ্যে অন্যতম হল, আমার মনে হয়েছে কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট এবার যে দলটি তৈরি করেছেন, তা একেবারেই ভাল নয়। কেননা, ভাল ভাল ক্রিকেটারদের দলে নেওয়ার পরিবর্তে তাঁরা দলে নিয়েছেন মাঝারি মানের খেলোয়াড়দের।
এঁদের দ্বারা আর যাই হোক ম্যাচ জেতা যায় না। নিলামের সময় যখন অন্য দলগুল যখন ভাল ভাল ক্রিকেটারদের দলে নেওয়ার পিছনে ছুটছেন, তখন নাইট ম্যানেজমেন্ট বসে আছেন ওই দলগুলির বাতিল খেলোয়াড়দের দলে নেওয়ার জন্য। কাজেই এর ফল যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে আশাকরি মঙ্গলবার নাইট কর্তারা বুঝে গিয়েছেন।
উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি, শ্রেয়স আইয়ারকে কোন যুক্তিতে ছেড়ে দিলেন কর্তারা? দেখবেন উত্তর নেই! অথচ তাঁরা ভেঙ্কটেশ আইয়ারের মত ঘরোয়া ট্রফি খেলা ক্রিকেটারকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন ট্রফি জয়ের। তাঁকে ২৩ কোটি টাকা দিয়ে দলে রেখে দেন। আর শ্রেয়সকে দল থেকে ছেঁটে ফেলেন। সত্যিই আমি অবাক হয়ে যাই এটা ভেবে যে কেকেআর-র দল নির্বাচন কারা করেন? তাঁরা সত্যিই আদৌ ক্রিকেটটা বোঝেন তো!
এরপরের কারণটা ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের প্রসঙ্গে বলা দরকার। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, রাসেল এখন অতীতের ছায়া মাত্র। ওর আর নতুন করে কিছু দেওয়ার নেই। এখন নাইটদের উচিত ওঁকে বসিয়ে ওর জায়গায় অন্য কোনও তরুণ ক্রিকেটারকে সুযোগ দিয়ে আগামী দিনের জন্য তৈরি রাখা। আর যদি তা না করে কর্তারা ষড়সের তেল নাকে গুঁজে ঘুমোতে থাকেন, তাহলে আর কিছু বলার নেই। ফল আরও মারাত্মক হবে। আর একটা কথা না বললেই নয়, সেটা হল কুইন্টন ডিককে বসিয়ে রহমতুল্লাহ গুরবাজকে খেলানো উচিত পরের ম্যাচ থেকে। কেননা ডিকক একেবারেই ছন্দে নেই।
আমার একটা প্রশ্ন আছে নাইট স্পটারদের প্রতি। অন্য দলগুলোর স্পটররা দিন-রাত ঘুড়ে ঘুড়ে যখন একজন-দুজন করে প্রতিভাবান ক্রিকটারদের তুলে নিয়ে মূল দলে খেলার সুযোগ করে দিচ্ছেন, সেখানে নাইট সিলকটারদের ভূমিকা কি? তাঁরা কোথায় থাকেন, কি করেন, সেটাই তো বোঝা যায় না। বাংলায় প্রো টি-টোয়েন্টি লিগ টুর্নামেন্ট হয়। সেখানে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার খেলেন। তাঁদের সুযোগ দিন। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে আপনাদেরই।
এবার আসি পঞ্জাব স্পিনার যুযবেন্দ্র চাহালের কথায়। এতদিন পর চাহালের বোলিং দেখে খুব ভাল লাগল। পিচের উপযুক্ত বোলিং করে ও বুঝিয়ে দিল যে এখনও ফুরিয়ে যায়নি। মাঝে কিছু সমস্যার জন্য অফ ফর্মে থাকলেও যেদিন চাহাল মারাত্মক হয়ে উঠবে, সেদিন যে বিপক্ষের ব্যাটারদের কি হাল হবে মঙ্গলবারের ম্যাচ তার প্রমাণ। এছাড়া অধিনায়ক হিসাবে প্রশংসা প্রাপ্য শ্রেয়সের-ও।