ইন্টারকে ধরাশায়ী করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করল এনরিকের পিএসজি
Enrique's PSG beat Inter to win Champions League

Truth of Bengal: জার্মানির রাজধানী মিউনিখ শহরটি ইতিহাসের বহু ঘটনার সাক্ষী ছিল এতদিন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল আরও একটি স্মরণীয় ঘটনা। না, এটা হিটলার, বা জার্মান বিপ্লব কিংবা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ঘটনা নয়, ফুটবল মাঠের স্মরণীয় ঘটনা। কেননা দীর্ঘ ৩২ বছর পর আবার এই জার্মান ভূমিতে ইটালির ঐতিহ্যশালী ক্লাব ইন্টার মিলানকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাব জয় করল ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজি। খেলার ফল শুনলে অনেকেই হয়ত ঘাবড়ে যাওয়ার কথা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ম্যাচের ইতিহাসে দীর্ঘদিন বাদে আবারও এত বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতল কোনও দল। এর আগে ১৯৬০ সালে ৭-৩ গোলের ব্যবধানে জার্মান ক্লাব ফ্র্যাঙ্কফুটকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তারপর থেকে এই রেকর্ড আজও অক্ষতই রয়ে গিয়েছে। তবে এরপর দু’বার এসি মিলান ও একবার বায়ার্ন মিউনিখ ৪-০ গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ট্রফি জয় করেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাব ঘরে তুলে নিল লুইস এনরিকের পিএসজি।
১৪ বছর আগে যখন কাতারের স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টের কর্তারা পিএসজি-র মালিকানা কিনে নেওয়ার পর থেকেই স্বপ্নের বীজ বোপন শুরু করেছিলেন। কিন্তু সাফল্য যেন কিছুতেই ধরা দিচ্ছিল না তাঁদের ঘরে। যে সাফল্যের মুখ দেখার জন্য অবশ্য কার্পন্য করেননি পিএসজি-র কাতারের মালিকানাধীন কর্তারা। সাফল্য পেতেই একটা সময় দলে এনেছিলেন লিওনেল মেসি থেকে কিলিয়ান এমবাপে এমনকি নেইমারদের পর্যন্ত। কিন্তু তবুও ধরা দেয়নি সাফল্য। কিন্তু এবার আর তাঁদের বঞ্চিত থাকতে হল না। হ্যামিলিনের বাঁশিওলার মত পিএসজি-র দায়িত্ব নিয়ে যেন ফরাসি ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে নজির সৃষ্টি করে গেলেন এক স্প্যানিশ বাঁশিওলা। তাঁর নাম লুইস এনরিকে।
ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ ইন্টারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পিএসজি। প্রথম গোলের জন্য তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় মাত্র ১১ মিনিট পর্যন্ত। মরোক্কোর ফুটবলার আচরাফ হাকিমির করা প্রথম গোলেই এগিয়ে যায় পিএসজি। এখান থেকেই রূপকথার ইতিহাস তৈরি শুরু করে ফরাসি ক্লাবটি। এরপর ২০ মিনিটে দ্বিতীয় গোল। এবার পিএসজির হয়ে স্কোরশিটে নাম তোলেন সেন্টার ফরোয়ার্ড দেরিজে দুয়ের।
দু’গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় এনরিকের দল। এরপর পিএসজিকে তৃতীয় গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৬২ মিনিট অবধি। ৬৩ মিনিটে আবার ফরাসি ক্লাবটির হয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে নেন দুয়ের। ৩ গোলে পিছিয়ে পড়ে ইন্টার তখন অনেকটাই ব্যাকফুটে। সবাই যখন ধরে নিয়েছে আর হয়ত ব্যবধান বাড়বে না, ঠিক তখনই আবার ৭৩ মিনিটে পিএসজি-র হয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে দিলেন কাভারেস্কইয়া। এরপর ৮৬ মিনিটে ইতালির ক্লাবটির জালে শেষ পেঁরেকটি পুঁতে দিয়ে এনরিকের হাতে ট্রফি জয় নিশ্চিত করে দিলেন মাইয়ুলু।
তারকার হাঁট থেকে সরে এসে মাত্র দু বছর হল তরুণদের নিয়ে দল গড়েছেন পিএসজি কর্তারা। এবার সেই তরুণরাই একের পর এক সাফল্য এনে দিল ফরাসি ক্লাবটিকে। চলতি মরসুমে লিগ ও ফরাসি কাপ জয়ের পাশাপাশি এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাব-ও জয় করল এনরিকের দল। ১৯৯৩ সালে মার্শেইয়ের পর দ্বিতীয় ফরাসি ক্লাব হিসেবে জয় করা বিজয় মুকুট। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের আসরে টিন-এজার ফুটবলার হিসেবে জোড়া গোল করে ইউসোবিওর রেকর্ড ভেঙে দিলেন দুয়ে। এর আগে ১৬২ সালে প্রথম টিনেজার খেলোয়াড় হিসেবে এই রেকর্ড গড়েছিলেন পর্তুগালের কিংবদন্তী ফুটবলার ইউসোবিও।