চোট-আঘাত এবং ভাগ্য সঙ্গ না দেওয়ায় আইএসএলে সাফল্য পাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল
East Bengal is not finding success in ISL due to injuries and bad luck

Truth Of Bengal: চলতি আইএসএলে শুক্রবার আরও একটি ম্যাচ খেলবে ইস্টবেঙ্গল। প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স। এই ম্যাচের ফলাফল কি হতে পারে, তাই নিয়ে যদি কেউ প্রশ্ন করেন, তাহলে আমি বলব, এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে কোনও ভবিষ্যৎবাণী করা যাবে না। কারণটা সকলেই জানেন।
তবুও আমি বলছি, এবারের আইএসএল-র শুরু থেকেই লাল-হলুদ পর পর ছটা ম্যাচে হার। তারপর, এএফসি চ্যালেঞ্জ ভুটানে গিয়ে দারুণ ফল করল। ফিরে এসে আইএসএলে শুরুটা ভাল করলেও, শেষ তিনটে ম্যাচেও আবার সেই হার। সব মিলিয়ে টিমটা এখন ১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আছে। পয়েন্ট অনুযায়ী কারণটা যদি ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে পরিষ্কার হয়ে যাবে কেন ইস্টবেঙ্গল ব্যর্থ হচ্ছে আইএসএল-এ এমনটাই জানালেন প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়।
এক নম্বর কারণ হচ্ছে, গত বছর আইএসএল-গোল্ডেন বুট জয়ী দিয়ামান্তাকসকে দলে নেওয়া হয়েছিল গোল করার জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, গত বছর দিয়ামান্তাকসকে যে ছন্দে পাওয়া গিয়েছিল এবার তার ধারেকাছে নেই। ফলে ও ছাড়া গোল না পেলেই সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে অস্কারের দল। কেননা একই অবস্থা ক্লেটনের-ও। ফলে গোল করতে না পারলে দলটা একদিন না একদিন চাপে পড়ে যাবেই। ডিফেন্স করে করে একটা-দুটো ম্যাচ বার করা যায়, সব ম্যাচ নয়। গোল করতেই হবে। আর এই গোল করার লোকেরই বড় অভাব ইস্টবেঙ্গলে।
জানুয়ারির উইন্ডোতে রিচার্ডকে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রথম দিনে ওঁর খেলা দেখে আমার মনে হয়েছে রিচার্ড কখনই পজিটিভ ফরোয়ার্ড নয়, ও প্রধানত উইং দিয়ে অপারেট করে। এবং আসলে রিচার্ড একজন উইঙ্গার। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, রিচার্ড বাম প্রান্ত দিয়ে খেলেন, সেই জায়গায় তো ইস্টবেঙ্গলের প্লেয়ার রয়েছেন, বিষ্ণু, মহেশ, রা আছেন, তা সত্ত্বেও রিচার্ডকে নিয়ে কি লাভ হল বোধগম্য হল না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, উইঙ্গার তো আর গোল করবে না। গোল করবেন স্ট্রাইকার। কাজেই কি কারণে স্ট্রাইকারের বদলে উইঙ্গার নেওয়া হল সেটাই বোঝা গেল না। আমি জানি না কাদের পরামর্শে প্লেয়ার নেওয়া হয় ?
এরপর দু নম্বর কারণ হচ্ছে, দলটাকে শেষ করে দিচ্ছে দলটার চোট-আঘাত ও কার্ড সমস্যা। ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের একাধিক প্লেয়ার যেমন সউল ক্রেসপো, মাধি তালালরা চোটের কারণে মাঠের বাইরে, একই কারণে মাঝে মাঝে বাইরে থাকছেন হেক্টরও। মাঝমেধ্যে সৌভিকও কার্ড সমস্যার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি হিজাজির অফ ফর্ম। সব মিলিয়ে পুরো ঘেটে অবস্থা ইস্টবেঙ্গলের।
কিন্তু তা সত্ত্বেও যখন দলটা কিছুটা ছন্দে ফিরছিল ঠিক সেই সময় চোট পেয়ে গেল আনোয়ার। সুস্থ বলতে একমাত্র জিকসন। ফলে কোচ হিমসিম খেয়ে যাচ্ছেন তাঁর প্রথম একাদশ তৈরি করতে গিয়ে। তবুও চেষ্টা করেছিলেন অস্কার। এ ক্ষেত্রে তাঁর কিছু করার নেই। কেননা চোট-আঘাত দলটাকে শেষ করে দিয়েছে। তার পাশাপাশি অবশ্যই লাল-হলুদকে সাথ দেয়নি ভাগ্যও। কেননা ম্যাচ জিততে গেলে ভাগ্যেরও সহায়তা দরকার সেটাও পায়নি ইস্টবেঙ্গল। তার প্রমাণ পাওয়া গেল মুম্বই ম্যাচে। গোল খাওয়ার পর দূরন্ত লড়াই করে এতগুলো সুযোগ তৈরি করার পরও কাঙ্খিত গোল পেল না। কাজেই আমার মনে হয় এই দুই সমস্যার কারণেই এবারের আইএসএল-এ পিছিয়ে পড়ল ইস্টবেঙ্গল।