রাজনীতি

‘সোভিয়েত বামপন্থা’, মাওতত্ত্বকে বাতিল করেছে গোটা বিশ্ব, বর্তমানে মূল্য নেই, দাবি ব্রাত্যর

Bratya Basu on left wing

The Truth of Bengal: যাদবপুরকাণ্ড ভয়ঙ্করভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজকে। সেই সঙ্গে আধুনিক শিক্ষার নৈতিক মূল্যবোধ নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এমনই বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যু ঘটনার পরেই, ছাত্রটির অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন রাজ্যের একাধিকমন্ত্রীসহ তৃণমূলের নেতানেত্রীরা। সেই দলে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবসুও। তিনি জানালেন, ছাত্রের বাবা বলেছেন, এই শোকে তিনি নির্বিকার হয়ে গেছেন। এবং এই ঘটনা পর সমাজে যে আলোড়ন পড়েছে, তা প্রত্যাশিত ছিল। এমন ঘটনা ঘটার পিছনে একটা সার্বিক অবক্ষয়ের বিষয় রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, রেগিং আগেও ছিল, কিন্তু তা কোনও ভাবেই শারীরিক অত্যাচারের জায়গা ছিল না।

কিন্তু যেভাবে হিংসা জায়গা করে নিচ্ছে, সেখানে মূলত দুটি বিষয় প্রধান হয়ে উঠেছে। যা আজকাল সোশাল মিডিয়াতে অত্যন্ত প্রকট। তা হল, হিংসা এবং ঈর্ষা। এই দুটি বিষয় বরাবর ছিল, যা ততটা প্রকট ছিল না, সভ্য মানুষ লুকিয়ে রাখত। কিন্তু এখন সেটা অনেক বেশি প্রকট হচ্ছে। এগুলো যারা করেছে, সেগুলো কোনও মনুষ্য প্রাণীও করবে না। এখন প্রশ্ন, সমাজে শিক্ষি ক্ষেত্রে রেগিং মারাত্ম আকার নিচ্ছে, এই সমস্যার সমাধান তাহলে কোথায়? এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর মত, গোটা পৃথিবী, সোভিয়েতকেন্দ্রীক স্বরাচারী বামপন্থা এবং মাও দর্শন গোটা বিশ্ব বাতিল করে দিয়েছে।  রাশিয়াতেও স্তালিন একজন নিন্দিত মানুষ। মাওয়ের রেড বুক, সভ্য কোনও দেশের লাইব্রেরি পাওয়া যায় না। কিছু সংখ্যা হয়তো ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট হিসেবে মিলতে পারে। ওই বই কেউ পড়ে না। কিন্তু কিছু সংখ্যাক নাগরিক আছেন, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মাও স্তালিনের তত্ত্ব নিয়ে স্লোগান দেন, তাঁরা জঙ্গলে যাওয়ার কসরত করেন না। তাঁরা ভালো করে মাওবাদ বা স্তালিনবাদও পড়েননি। এরা ক্রমশ পৃথিবীতে শেষ হয়ে আসছে।

এমনকী পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা, লোকসভার দিকে তাকালেও বোঝা যায়, এদের যুগটা শেষ হয়ে গেছে।  অন্যদিকে অসংগঠতিক শ্রমিক, মেহনতি মানুষের পক্ষ যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  নিয়েছেন, তা আর কোথাও দেখা যায় না। এখন প্রশ্ন তাহলে, তাহলে এই ধরণের ছাত্ররা যে ভাবে বছরের পর বছর রেগিং চালিয়ে যাচ্ছে, তার পিছনে মনস্তত্ত্ব কী! এ প্রসঙ্গে শিক্ষমন্ত্রীর দাবি, আসলে গ্রাম বা মফস্বল থেকে উঠে আসা, কিছু পড়ুয়ার সঙ্গে মানসিক স্থীতির মিল না হলেও, তারা কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ছে, অত্যাচার চালাচ্ছে। এরা যেভাবে জায়গাগুলোকে কায়েম করে রয়েছে, তা অনেকটাই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো।  এরা স্লোগানও দেয়, আবার হয়তো ড্রাগের নেশা করে। এই ছবি উঠে আসে সংবাদমাধ্যমে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের প্রবেশ নিয়ে দ্বিচারিতাও রয়েছে। অর্থাৎ এদের অবস্থান নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মত, শিক্ষাদফতর থেকে প্রত্যেকটি কলেজ অ্যন্টি রেগিং সংক্রান্ত, রাঘবন কমিটির সুপারিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তা কতটা কার্যকর হবে, পুরোটাই নির্ভর করছে কর্তৃপক্ষের উপর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেগুলি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর মেনে চলছেন না। ইদানিং আরও এক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক রাজ্যপাল এসেছেন, তিনি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঠুঁটো করে দিচ্ছেন। যেহেতু পশ্চিমবাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা সারা বিশ্বে সমাদৃত, তাই এই কাঠামোকে রাজ্যপাল ধ্বংস করতে চান। শিক্ষামন্ত্রীর আরও দাবি, উপরওয়ালাদের চাপে পড়েই রাজ্যপাল রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে যাচ্ছেন। এবং এটি কোনও ইগো বা অহং থেকে করছেন না, এটি সম্পূর্ণভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে গৈরিকীকরণের রাজনীতি করছেন।

 

Related Articles