তিনশো বছর ধরে জনশূন্য মরুগ্রাম কুলধারা

The Truth Of Bengal, Mou Basu: সত্যজিত রায়ের সোনার কেল্লা সিনেমার দৌলতে বাঙালির অন্যতম প্রিয় বেড়ানোর জায়গা হল মরুরাজ্য রাজস্থান। মরুরাজ্য রাজস্থানের এক রহস্যময় গ্রাম হল কুলধারা। এক সময় থর মরুভূমির বুকে এই গ্রাম ছিল একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম। কিন্তু গত প্রায় ৩০০ বছর ধরে যা জনশূন্য। স্থানীয় গ্রামবাসীদের মতে, এই ভূতুড়ে গ্রামে রাত হলেই অতৃপ্ত আত্মারা ঘুরে বেড়ায় ওই গ্রামে। বর্তমানে কুলধারার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ এএসআই (ASI)। কুলধারা গ্রামের সমস্ত বাড়ির চাল উড়ে গেলেও দেওয়াল পড়ে যায়নি।টিকিট কেটে সেখানে পর্যটকদের ঢোকার অনুমতি রয়েছে।
জয়শলমেঢ় থেকে কুলধারার দূরত্ব মেরে কেটে ১৮ কিলোমিটার। লোকমুখ শোনা যায়, একটা সময় পলিওয়াল ব্রাহ্মণদের বাস ছিল ওই গ্রামে। কিন্তু এহেন জনবহুল গ্রাম কী ভাবে লোকশূন্য হল? এর নেপথ্যে রয়েছে এক রোমাঞ্চকর কাহিনি।
এক সময় এখানকার রাজার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সালিম সিং। কুলধারার গ্রামপ্রধানের মেয়ের উপর কুনজর পড়েছিল তাঁর। একদিন গ্রামের মোড়লকে ডেকে সটান মেয়েকে তাঁর হাতে তুলে দিতে বলেন সালিম। অন্যথায় ফল ভালো হবে না বলেও হুমকি দেন তিনি। সালিম যা চান, শেষ পর্যন্ত তা হাসিল করেই ছাড়েন। রাজা তাঁর হাতের পুতুল। প্রমাদ গুণলেন গ্রামপ্রধান। তড়িঘড়ি সবাইকে নিয়ে এলাকা ছাড়লেন তিনি। যাওয়ার সময় অভিশাপ দিয়ে গেলেন ব্রাহ্মণরা। আর কোনো দিন এই গ্রামে মানুষের বসতি হবে না। সেই থেকে জনশূন্য কুলধারা।
এর আবার একটা পালটা মতও আছে। অনেকে আবার সালিম ও গ্রামপ্রধানের মেয়ের কাহিনিতে প্রেমের অনুষঙ্গও খুঁজে পেয়েছেন। তাঁদের দাবি, মোড়লের মেয়ের প্রেমে পড়েন সালিম। তাঁকে বিয়েও করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি গ্রামবাসীরা। তাই এলাকা ছাড়ার আগে পরিবারের সম্মানরক্ষায় ওই মেয়েটিকে খুন করেন তাঁরা। সেই থেকে ওই মেয়েটির অতৃপ্ত আত্মা গ্রামটিতে ঘুরে বেড়ায় বলে কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। ঐতিহাসিকদের দাবি, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে কুলধারায় জনবসতি গড়ে উঠেছিল। তবে কীভাবে এই গ্রাম জনশূন্য হয়েছিল, তার সুস্পষ্ট কোনও নথি পাওয়া যায়নি।