
The Truth of Bengal,Mou Basu:ফল বা সবজির বাজারে ঢুঁ মারলে অনেক সময় গাঢ় গোলাপি রঙের অদ্ভুত দর্শনের গায়ে কাঁটা দেওয়া ফল দেখা যায়। নাম তার ড্রাগন ফল বা পিটায়া ফ্রুট। ক্যাকটাস জাতীয় ফলের গায়ে ড্রাগনের মতো কাঁটা দেওয়া থাকে বলে ড্রাগন ফল বলা হয়। গায়ে কাঁটা দেওয়া হলেও স্বল্প পরিচিত এই ড্রাগন ফল কিন্তু দারুণ উপকারী। ফলের গায়ে কাঁটা কাঁটা থাকে বলে অনেক বুঝতে পারেন না এটা কীভাবে খাবেন? ফলটি দু’ভাগে কেটে ভেতরের অংশ চামচ দিয়ে কেটে কেটে এমনিই খেতে পারেন অথবা স্মুদি বা শরবত বানিয়ে খান।
১) ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমায় ড্রাগন ফল। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে বলে ড্রাগন ফল রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে ডায়াবেটিকদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২) ড্রাগন ফলে ক্যানসার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
৩) ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে বলে এই ফল খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ভিটামিন সি ডায়াবেটিস, অ্যালঝাইমার্স, পার্কিনসনস, ক্যানসারের মতো গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়া আটকায়। শরীরে যত বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি ঢুকবে তত রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়বে। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে বলে দৈনিক ভিটামিন সি’র চাহিদা আমরা ড্রাগন ফল খেলেই মেটাতে পারি।
৪) ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ওলিগোস্যাকারাইডস নামে এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট থাকে। এই বিশেষ রকমের কার্বোহাইড্রেট শরীরে ফ্লোরা নামক উপকারী ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে সাহায্য করে যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে বলেও তা হজমশক্তি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কোলন ক্যানসার ও হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
৫) ড্রাগন ফলের ভেতরের অংশে যে লাল রঙের পাল্প থাকে তাতে বেটালেইনস নামক পদার্থ আছে। এই পদার্থ রক্তের ক্ষতিকারক ব্যাড কোলেস্টেরল কমায়। ছোট ছোট কালো দানায় প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ আর ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
৬) হাবিজাবি ভাজাভুজি খাবার, পরিবেশ দূষণ আর স্ট্রেস বা উদ্বেগের মাশুল দিচ্ছে আমাদের নরম ত্বক। অকালে বুড়িয়ে যাচ্ছে ত্বক। ড্রাগন ফল ত্বকের অকালে বুড়িয়ে যাওয়া আটকায়। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পাওয়া যায় যা সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের লালচে ভাব, শুষ্ক ত্বক, ব্রণ, ফুসকুড়ি, মেচেতার মতো ত্বকের নানাবিধ সমস্যা দূর করে। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে বলে তা ত্বক উজ্জ্বল করে। প্রতিদিন নিয়মিত ড্রাগন ফলের রস খেলে ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য বাড়ে।
৭) ড্রাগন ফলের পাল্প বেটে তা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে চুল ঘন কালো হয়। চুলের বৃদ্ধি হয়। কৃত্রিম রঙ করলে চুলের যে ক্ষতি হয়, চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। নিয়মিত ড্রাগন ফলের পাল্প বেটে চুলের গোড়ায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়।