কলকাতারাজ্যের খবর

ধর্ষণের মতো ঘটনা‘দেশের লজ্জা’,প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি মুখ্যমন্ত্রীর,বিরোধীপক্ষকে কড়া জবাব মমতার 

The Chief Minister demanded the resignation of the Prime Minister

Truth of Bengal: ‘ধর্ষণ দেশের লজ্জা’,সামাজিক সংস্কার দরকার। সামাজিক ব্যধি রোধে বাংলার সরকার দেশের মধ্যে প্রথম এই কঠোরতম আইন আনতে চলেছে। বিরোধী বিজেপিকে কড়া জবাব দিতে গিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা বলেন। আরজি করের ঘটনায় রাজ্য সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নেয় বলেও স্পষ্ট করেন তিনি। তবুও বিজেপি বাংলার এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করায় এবংমুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করায় পাল্টা সুর চড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

বাংলায় ধর্ষণের মতো ঘটনা রুখতে ধর্ষকদের কঠোরতম শাস্তি চায় রাজ্য সরকার। সেজন্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড বিল-২০২৪ আনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট করেন,সারা দেশ যা পারেনি তাই করে দেখাল বাংলা। বাংলা দেশের কাছে তৈরি করল নজির। ধর্ষণের জন্য এই রাজ্যের সরকার কঠোর আইন করল,যেখানে প্রাণদণ্ডের মতো আইনি সংস্থান থাকছে। এরপরই বাংলা বিরোধী প্রচারের জন্য বিরোধীদের একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিজেপি শাসিত রাজ্যের সঙ্গে বাংলার দৃষ্টিভঙ্গি বা সদিচ্ছার পার্থক্যে কথা তুলে ধরেন।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কামদুনি সহ একাধিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে বাংলা বিরোধী নানা বক্তব্য পেশ করেন। এই সমস্যা যে জাতীয় সমস্যা,দেশের লজ্জা তা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি শাসিত রাজ্যের ধর্ষণকাণ্ডের বীভত্স নজির উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে,তিনি বিজেপিকে জবাব দিতে দিতে গিয়ে বলেন, উন্নাও, হাথরসের ঘটনায় এখনও বিচার পায় নি। প্রতিদিন দেশে প্রায় ৯০ টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে বিভিন্ন রাজ্যের ধর্ষণের ঘটনা উঠে আসে   মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে।

বিরোধীরা বিধানসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তাঁকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি মণিপুর,হাথরাস,উন্নাও সহ প্রতি দিন দেশে ৯০টি ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটায়. প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।তাঁর বক্তব্যে পরিষ্কার, ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইন প্রণয়নের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দুটো চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর থেকে দুটো উত্তর দেয়, কিন্তু যা মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান তার সদুত্তর আসেনি।

কিভাবে বাংলা কে শুধু বদনাম করা হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়।যেভাবে বিজেপি শাসিত গুজরাটে বিলকিস বানো ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতনকারীদের ফুলমালা দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়,সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিরোধীপক্ষকে জবাব দেন মমতা বন্দ্যোপা্ধ্যায়। ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেন,কলকাতা নিরাপদতম শহর। এখানে কোনও অপরাধী ছাড়া পায়নি।

কামদুনির ক্ষেত্রেও রাজ্য কঠোর পদক্ষেপ করেছিল। সামাজিক ব্যধি রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণে বাংলার সরকার যে পিছিয়ে আসতে চায় না তা এই দ্রুত বিচারের জন্য সংশোধিত আইনের কথা তুলে ধরে তিনি বিরোধীদের জবাব দেন। বাংলার কথা বলার আগে বিজেপি শাসিত গুজরাট বা উত্তরপ্রদেশের বিভীষিকাময় অবস্থার কথা ভাবতে বলেন তিনি। বিরোধীপক্ষের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, বাংলার সম্মান নিয়ে ভাবুন।

তিনি কেন্দ্রের সদিচ্ছার অভাবের কথা তুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যে,সেজন্য নির্ভয়া ফান্ডে ১০৮ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের কাছে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও ২৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়নি বলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে স্পষ্ট উত্তর দেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইন না করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Related Articles