কলকাতাস্বাস্থ্য

বেআইনি প্যাকেজড পানীয় জল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ

Concerned about drinking water

The Truth of Bengal, Rahul chattopadhyay: প্যাকেজড পানীয় জলের শীর্ষ সংস্থা, ওয়েস্ট বেঙ্গল প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার ম্যানুফ্যাকচারারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নির্দিষ্ট লাইসেন্স ব্যতীত স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর প্যাকেজড পানীয় জলের ব্যাপক বিক্রয়ের বিষয়ে গুরুতর আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।ওয়েস্ট বেঙ্গল প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার ম্যানুফ্যাকচারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ করেছে যে প্যাকেজড পানীয় জলের বেশী মাত্রায় নকল উত্পাদন ভয়ানক স্বাস্থ্যহানিকারক আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং জলবাহিত রোগের কারণে রাজ্যের শিশু,বৃদ্ধ সহ বহু মানুষের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন আরো ব্যাপক ভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে বেআইনি নির্মাতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে অবিলম্বে সরকারি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার ম্যানুফ্যাকচারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন পশ্চিমবঙ্গের প্যাকেজড পানীয় জনের শীর্ষ সংস্থা, অস্বাস্থ্যকর প্যাকেজড পানীয় জলের অননুমোদিত উত্পাদন এবং বিক্রয়ের জন্য জলের ব্যাপক অপব্যবহার এবং জনগণের স্বাস্থ্যের উপর এর প্রতিকূল প্রভাব নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।কলকাতায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে  সঞ্জীব নাগ-সভাপতি,  জিতেন্দ্র সুরানা- চেয়ারম্যান,  নবীন জয়রামকা-সচিব  সুকমল পাল-প্রাক্তন সভাপতি, সুদীপ ঘোষ-সহ সভাপতি- ডব্লিউবিপিডিডব্লিউ.এমডব্লিউএ এবং আইনজ্ঞ ডঃ হরিন্দর সিং অ্যাসোসিয়েশনের আইন ও মিডিয়া সমন্বয়কারী বক্তব্য রাখেন ।

তারা বলেন অ্যাসোসিয়েশন এর মূলমন্ত্র স্লোগান হল “জল ই জীবন”। আমাদের উদ্দেশ্য হল  নাগরিকদের সচেতন করা এবং  বেআইনি ভাবে অস্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্যাকেজড পানীয় জল তৈরি ও বিক্রি যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে তা সরকারের নজরে আনাও এ সম্পর্কে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া। সুদীপ ঘোষ বলেন, “যদিও পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৩৫০-৪০০ লাইসেন্সযুক্ত প্যাকেজযুক্ত পানীয় জল প্রস্তুতকারক রয়েছে, তবে হাজার হাজার অবৈধ ইউনিটগুলি লোকালয়ে গড়ে উঠেছে, যার ফলে ব্যবহারকারীদের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং এটি রাজ্যব্যাপী স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে একটি উদ্বেগের বিষয় ।” অনিয়ন্ত্রিতভাবে ও অ বিজ্ঞানসম্মতভাবে উৎপাদকরা জল সরবরাহের সাথে আপস করছে বেশি লাভের আশায়।এর ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে অসংখ্য জীবন আজ সমূহ বিপদের মুখে। ওইসব বোতলজাত পানীয় জলে কলেরা এবং টাইফয়েডের মতো জলবাহিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে রয়েছে। এই অনিয়ন্ত্রিত ইউনিটগুলির উপযুক্ত আইনি সম্মতি এবং প্রয়োজনীয় মানগুলিরও অভাব রয়েছে যার কারণে এটি মূল্যবান জলসম্পদ, মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপরও বড় প্রভাব ফেলছে। বিশিষ্ট আইনজীবী ও অ্যাসোসিয়েশনের আইন উপদেষ্টা হরিন্দর সিং বলেন আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে একটি হল জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং জলবাহিত রোগ এড়াতে নাগরিকদের প্যাকেজড পানীয় জল ব্যবহার বা ক্রয় করার সময় যথাযথ গুনমান দেখে নেওয়ার জন্য সচেতন করা। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, এনজিও, সরকারের সাথে জড়িত হয়ে এই বিষয়গুলিকে মোকাবেলা করার জন্য কার্যকর সমাধান তৈরি করাও আমাদের উদ্দেশ্য,” ডব্লিউবিপিডিডব্লিউএমডব্লিউ এর অভিযোগ যে কোনো লেবেল বা অতিরিক্ত খনিজকরণ এবং পরিশোধন ছাড়াই ২০ লিটারের জারে পানীয় জল তৈরি এবং বিক্রি করা হচ্ছে বহু এলাকায় যার ফলে সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য এবং আস্থা উভয় ক্ষেত্রেই ঝুঁকির সম্মুখীন।

এই জালিয়াত জল উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা ২০ লিটার জার এর পানীয় জল বাংকরি বাজারের প্রায় ৯০% দখল করে ফেলেছে। জনসাধারণ এই উদ্বেগজনক সত্য সম্পর্কে অজান্তে তাদের নিজের ক্ষতি সত্বেও  ওই সব পানীয়জল খেয়ে যাচ্ছেন। নবীন জয়রামকা বলেন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে প্রতিটি ব্যাচের জল বাজারে পাঠানোর আগে যেনো  সর্বাঙ্গীণ নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং তার সাথে সঠিক লেবেলিংও অত্যন্ত জরুরি। জলের পাত্রে আইএসআই, বিআই.এস. এবং এফ এস এস এআই লাইসেন্সের বিবরণ স্পষ্টভাবে প্রদর্শিত করা উচিত যা গুণমান এবং নিরাপত্তার সূচক ও সঠিক গুণমান হিসেবে সুনিশ্চিত করবে গ্রাহকদের। অ্যাসোসিয়েশন ,পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের সচিবের তত্ত্বাবধানে টাস্কফোর্স গঠনের জন্য জরুরি আবেদন করেছে। এই টাস্কফোর্স সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায় ,জেলা শাসকের তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল প্রতিটি জেলায় একটি ডেডিকেটেড টাস্ক ফোর্স তৈরি করা, যার মধ্যে পুলিশ, এনফোর্সমেন্ট, বিআইএস বিভাগ,  পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও খাদ্য দপ্তর এবং অন্যান্য লাইসেন্স প্রদানকারী।

Related Articles