“মুনির-শেহবাজে বিরক্ত জনগণ, ভারতই হামলা করুক”….মার্কিন রিপোর্টে তোলপাড় পাকিস্তান
'People fed up with Munir-Shehbaz, let India attack': US report

Truth of Bengal: পাকিস্তানে এই মুহূর্তে যুদ্ধ প্রস্তুতির গুঞ্জন চরমে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে, সেনাবাহিনীর কনভয় সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছাচ্ছে, যুদ্ধবিমান আকাশে গর্জে উঠছে। সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও যুদ্ধের আলোচনা তুঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এবং সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির লাগাতার কড়া বার্তা দিচ্ছেন। তবে এসব ঘোষণার মাঝেও সাধারণ মানুষ একটাই প্রশ্ন তুলছে: “আমাদের গুলি নয়, রুটি চাই!”
যুদ্ধ নয়, শান্তি চায় মানুষ
অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা পাকিস্তানে যুদ্ধের আলোচনা মানুষকে শুধু ভীতই করছে না, বরং ক্ষুব্ধও করছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ইসলামাবাদের এক ২১ বছর বয়সী ছাত্রী তাহসিন জেহরা বলেন, “আমরা আগেই দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলায় কষ্ট পাচ্ছি। তার ওপর আবার যুদ্ধের হুমকি! আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।” তাহসিনের মতো হাজারো তরুণ-তরুণী ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। তারা বলছে, সরকার ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে জনগণকে ঠকাচ্ছে।
সেনার চেয়ে বেশি ভয় মুদ্রাস্ফীতির
সেনাপ্রধানের কড়া বক্তব্যও এখন আর মানুষের মনে ভরসা জাগাতে পারছে না। ইসলামাবাদের ছাত্র ইনামুল্লাহ বলেন, “দেশ এখন আর আগের মতো শক্তিশালী নেই। অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের দুর্বল করে ফেলেছে।” এ কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে “যুদ্ধ নয়, চাকরি দাও” — এমন মিম ও পোস্ট।
সেনাবাহিনীর ওপর ক্ষোভ বাড়ছে
এক সময় সংকটে জাতিকে একত্রিত করার প্রতীক হিসেবে দেখা হলেও, আজ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সমালোচনার মুখে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানোর পর অনেকেই সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ইমরানের দলের সাবেক সাংসদ আলিয়া হামজা বলেন, “জনগণ যদি পাশে না থাকে, তবে যুদ্ধ করবে কে?” অনেক তরুণ আজ সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিরক্ত।
ভয় আর অস্থিরতায় পর্যটনও বন্ধ
পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নীলম ভ্যালি ও কেরানে এখন নিস্তব্ধতা। কেরানের পর্যটন ব্যবসায়ী রাজা আমজাদ জানান, “সরকারের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মানুষ ভয়েই আসছে না।” অন্যদিকে আথমাকামের সাদিয়া বিবি তার সন্তানদের জন্য বাড়ির পেছনে বাঙ্কার তৈরি করছেন, যদিও গোলাগুলি এখনো শুরু হয়নি।
দেশ ছাড়তে চায় তরুণ প্রজন্ম
দেশে অস্থিরতা, বেকারত্ব ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার কারণে অনেক তরুণই পাকিস্তান ছেড়ে যেতে চায়। ইসলামাবাদের ৩১ বছর বয়সী জারা খান বলেন, “এখানে বাঁচা খুব কঠিন। কাজ নেই, উপার্জনের সুযোগ নেই। পরিবার চালানোও অসম্ভব। যুদ্ধের কথা বলা এখন পাগলামি।”
রুটি, শান্তি ও স্বস্তিই মানুষের চাওয়া
সেনা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, বিরোধীদের দমন এবং আর্থিক সংকটে দেশ আজ গভীর সমস্যায়। যুদ্ধের হুমকি মানুষকে আরো ভীত ও হতাশ করেছে। তাই জনগণের স্পষ্ট বার্তা: “আমরা যুদ্ধ চাই না, স্লোগান চাই না… আমাদের চাই রুটি, শান্তি আর স্বস্তি।”