আন্তর্জাতিক

ভারতের সঙ্গে আলোচনা হল কাশ্মীর সমস্যার একমাত্র সমাধান: শাহবাজ শরিফ

Dialogue with India is the only solution to Kashmir issue: Shahbaz Sharif

Truth Of Bengal: চিরবৈরী প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর-সহ সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমাধান পেতে চায় পাকিস্তান। এ নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, তাঁর দেশ কাশ্মীর-সহ সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান চায়। পাশাপাশি তিনি কাশ্মীরি জনগণের প্রতি পাকিস্তানের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, একমাত্র ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে। কাশ্মীর দিবস উপলক্ষে বুধবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজফরাবাদে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) আইনসভার বিশেষ অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘আমরা কাশ্মীর-সহ সমস্ত সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চাই।’ পাকিস্তান প্রতি বছর এই দিনটিতে কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে থাকে।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমরা চাই সব সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে হোক, কাশ্মীর সমস্যাও এর ব্যতিক্রম নয়। ভারতকে ২০১৯ ‍সালের ৫ আগস্টের চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করতে হবে এবং সংলাপ শুরু করতে হবে।’

পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রসঙ্গকে ইঙ্গিত করে। যার মাধ্যমে মোদি সরকার ওইদিন জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে এবং রাজ্যটিকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে। মূলত ২০১৯ সালে ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের একমাত্র উপায় আলোচনা, যা ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণাতেও বলা হয়েছিল। সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী পাকিস্তান সফর করেছিলেন এবং উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে একমত হয়েছিল।’

এদিকে ভারত বারবার বলে আসছে যে, তারা পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়। তবে সন্ত্রাসবাদ, শত্রুতা এবং সহিংসতা মুক্ত পরিবেশে। মোদি সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ছিল, আছে এবং চিরকাল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ থাকবে। এ বিষয়ে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ভারত অস্ত্র মজুদ করছে, কিন্তু অস্ত্রের জোরে শান্তি আসবে না। এতে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলাবে না। ভারতকে অবশ্যই বুঝতে হবে, শান্তিই উন্নয়নের একমাত্র পথ।

কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তান তাদের নৈতিক, কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’ এদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যেন কাশ্মীরের জনগণ তাঁদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে এবং এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান-সহ সামরিক বাহিনীর অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও কাশ্মীরিদের প্রতি তাঁদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ আনোয়ারুল হক বলেছেন, ‘কাশ্মীরিদের চূড়ান্ত গন্তব্য পাকিস্তান এবং কাশ্মীর সমস্যা সমাধান না হলে এই অঞ্চলে শান্তি আসবে না।’ এদিন দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম রেডিও পাকিস্তানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীর সংহতি দিবস উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বিমানবন্দর এবং রেল স্টেশনগুলিতে পোস্টার ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।

Related Articles