অফবিটআন্তর্জাতিক
Trending

বড় খবর! শক্তিশালী সৌরঝড়ের প্রভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে ইন্টারনেট ব্যবস্থা

Big news! Internet system may be disrupted due to strong solar storm

The Truth Of Bengal :  মহাকাশ নিয়ে মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই। আর যদি এর সাথে যুক্ত থাকে পৃথিবীর সংকটের কোন ঘটনা তাহলে তো কোনো কথাই নেই। মানুষ আরো মুখিয়ে ওঠে ওই তথ্যটি সম্পর্কে অবগত হতে। দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড় শুক্রবার পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে। যার ফলে তাসমানিয়া থেকে শুরু করে ব্রিটেন পর্যন্ত আকাশে দর্শনীয় মহাকাশীও আলোর প্রদর্শনী শুরু করেছিল। ইহা সপ্তাহান্তেও অব্যাহত থাকায় উপগ্রহ এবং পাওয়ার গ্রিড এর সম্ভাব্য ব্যাঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

NOAA অর্থাৎ ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের মতে, GMT এর স্থানীয় সময় অনুযায়ী ৪ টের সময় সূর্য থেকে প্লাজমা এবং চৌম্বক ক্ষেত্র নির্গত হয়েছে।

প্রসঙ্গত ২০০৩ এর তথাকথিত “হ্যালোইন স্টর্মস”এরপর প্রথম যা সুইডেনে ব্ল্যাকআউট এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুৎ পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আগামী দিনে আরও সিএমই গ্রহকে ধাক্কা দেবে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। উত্তর ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে অরোরার একটি ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে।
বৃটেনের হার্ডফোর্ডের একজন থিঙ্ক ট্যাঙ্কার ইয়ান ম্যানসফিল্ড এএফপিকে জানিয়েছেন, ” আমরা আমাদের বাচ্চাদের এই আলো দেখার জন্য জাগিয়ে দিয়েছি। যা খালি চোখে স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান।”

অপরদিকে বিখ্যাত ফটোগ্রাফার শন ও’ রিওর্ডান নিজেদের এক্স হান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করে তাতে লিখেছেন, “আজ ভোর ৪ টায় আসমানিয়াতে একেবারে বাইবেলের আকাশ ফুটে উঠবে। আর এই মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ আমি হারাতে চাই না। তাই আমি আজ চলে যাচ্ছি। ”

স্যাটেলাইট অপারেটরের কর্তৃপক্ষরা এটি নোটিশ জারি করে জানিয়েছেন, এয়ার লাইন্স এবং পাওয়ার গ্রিডকে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ব্যাঘাতের জন্য সতর্ক থাকতে হবে। কর্মকর্তাদের অনুমান, সৌর ঝড় থেকে নির্গত এই উপাদান গুলি সৌর অগ্নিশিখার বিপরীতে যা আলোর গতিতে ভ্রমণ করে এবং প্রায় আট মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে পৌঁছায়। সিএমইগুলি আরো বেশি গতিতে ভ্রমণ করে। যা বর্তমান সময়ে গড় প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ভ্রমণ করে। এছাড়াও ইহা বিশাল সান স্পট ক্লাসটার থেকে নির্গত হয়। যা আমাদের গ্রহের চেয়ে ১৭ গুণ প্রশস্ত।

রিডিং ইউনিভার্সিটির স্পেস ফিজিক্সের অধ্যাপক ম্যাথিউ ওয়েনস এএফপিকে জানিয়েছেন, সৌর ঝড়ের প্রভাব গুলি গ্রহের উত্তর এবং দক্ষিণ অক্ষাংশে অনেক বেশি অনুভূত হবে। তবে তা শুধু প্রসারী হবে কিনা তা নির্ভর করছে ঝড়ের চূড়ান্ত শক্তির ওপর। তিনি আরো জানান, ” আমার পরামর্শ আজ রাতে আপনারা বাইরে যান এবং দেখুন। কারণ অরোরা হল একটি দর্শনীয় বস্তু। আর এছাড়া যদি মানুষের কাছে এক বিশেষ চশমা থাকে যা আপনার চোখের কোন ক্ষতি করবে না তাহলে আপনি দিনের বেলাতেও সূর্যের দাগ দেখতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া এবং আলাব আমার মত জায়গায় আপনি এটি দেখতে পারবেন। চোখে না পারলে আপনি আপনার হাতের মুঠোফোনটিকে নিয়ে সেই দৃশ্যটি ক্যাপচার করুন। এরপর আপনার নিজের চোখে দেখা দৃশ্য এবং মুঠোফোনে বন্দি সেই চিত্রটির তুলনা করলে আপনি অবাক হবেন।”

সৌর ঝড়ের ফলে কি কি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে?

ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সাথে যুক্ত চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ওঠানামা করে দীর্ঘ তারে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে, যার ফলে ব্ল্যাকআউট হতে পারে। দীর্ঘ পাইপলাইনগুলিও বিদ্যুতায়িত হতে পারে, যা ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যাগুলির দিকে পরিচালিত করে। মহাকাশযানও উচ্চ মাত্রার বিকিরণের ঝুঁকিতে রয়েছে, যদিও বায়ুমণ্ডল এটিকে পৃথিবীতে পৌঁছাতে বাধা দেয়।

NASA-এর একটি নিবেদিত দল রয়েছে যা মহাকাশচারীর নিরাপত্তার দিকে নজর রাখছে, এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদেরকে আরো সুরক্ষিত স্থানে প্রেরণ করতে পারে।
পায়রা এবং অন্যান্য প্রজাতি যাদের অভ্যন্তরীণ জৈবিক কম্পাস আছে তাই তারাও আক্রান্ত হতে পারে। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি অনুসারে, কবুতর হ্যান্ডলাররা ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সময় পাখিদের দিক চিনে বাড়িতে ফিরে আসার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই শুরু ঝড়ের ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কোন বিকল্প পথ অবলম্বন করা উচিত। যেমন হাতে টর্চলাইট রাখা কিংবা ব্যাটারির সাহায্যে চলা কোন আলো।

রেকর্ড করা ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় হল ক্যারিংটন ইভেন্ট। যা 1859 সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিচার্ড ক্যারিংটনের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। সেই সময় টেলিগ্রাফ লাইনে অতিরিক্ত স্রোত প্রযুক্তিবিদদের বৈদ্যুতিক শক সৃষ্টি করেছিল এবং এমনকি কিছু টেলিগ্রাফ সরঞ্জামে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

Related Articles