দেশ

সম্বল যাওয়ার পথে রাহুল-প্রিয়াঙ্কাকে বাধা, চাপা উত্তেজনা যোগী রাজ্যে

Rahul-Priyanka stopped on way to Sambal, tension in Yogi state

Truth Of Bengal: সাম্প্রতিক ঘটনার জেরে ক্রমেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে উত্তরপ্রদেশের সম্বলে। এই গোটা পরিস্থিতির নেপথ্যে রয়েছে একটি মসজিদ। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সম্ভলে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তবে এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বুধবার সম্বলে যাওয়ার চেষ্টা করেন কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি এবং সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা ভদ্র।

এরই মাঝে আবার সম্বলের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজেন্দ্র পেনসিয়া মঙ্গলবারই বুলন্দশহর, আমরোহা, গাজিয়াবাদ এবং গৌতম বুদ্ধ নগর-সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্তাদের অনুরোধ করেছেন, যাতে রাহুল গান্ধিকে তাঁদের জেলা সীমান্তেই থামিয়ে দেওয়া হয়। যাতে তিনি আর সম্বলে প্রবেশ করতে না পারেন। এই আবহে গৌতম বুদ্ধ নগর ও গাজিয়াবাদের পুলিশ কমিশনারদের পাশাপাশি আমরোহা ও বুলন্দশহরের পুলিশ সুপারদের চিঠি দিয়েছেন সম্ভলের জেলাশাসক।

এদিন পূর্ব ঘোষণা মতো রাহুল গান্ধি এবং প্রিয়াঙ্কা ভদ্র উত্তর প্রদেশের সম্বলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন এলাকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে। কংগ্রেস কর্মীরাও সম্বলে যাওয়ার জন্য ১০ জনপথের বাসভবনের বাইরে জড়ো হন। সেখান থেকে সম্বল যাওয়ার গোটা পথই কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এলাকার সংবেদনশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখ করে গান্ধিদের সম্বলে পৌঁছতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে জানা গিয়েছে।

তবে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা সম্বল যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও যাত্রার আগেই তাঁদের আটকে দেওয়া হল দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ গাজিপুর সীমানায়। যোগী রাজ্যে প্রবেশের মুখেই তাঁদের আটকানো হয়। রাহুল-প্রিয়াঙ্কার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকেই গাজিপুর সীমানায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। বসানো হয় পুলিশের ব্যারিকেড, যার জেরে দিল্লি-মিরাট এক্সপ্রেসওয়ে অবরুদ্ধ হয়ে যায়। কর্তব্যরত পুলিশ উত্তরপ্রদেশে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। রাহুলদের সঙ্গে থাকা অনেক কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক পুলিশের ব্যারিকেড টপকে এগনোর চেষ্টা করেন। শুরু হয় পুলিশের ধরপাকড়।

গত ১৯ নভেম্বর সম্ভলের স্থানীয় আদালতে একটি মামলায় দাবি করা হয়, মোগল সম্রাট বাবরের আমলে হরিহর মন্দির ভেঙে সেখানকার শাহি জামা মসজিদ তৈরি হয়েছিল। মামলা দায়ের করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিম্ন আদালতের বিচারক আদিত্য গোস্বামী কমিশনার নিয়োগ করে মসজিদে সেই দিনই সমীক্ষার নির্দেশ দেন। কোট গারভী এলাকায় প্রথম দিনের সমীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছিল। কিন্তু এর পর গত ২৪ নভেম্বর দ্বিতীয় বার সমীক্ষার সময়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তাতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের গুলিতেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।

পাশাপাশি ওই দিনের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন বলেও জানা গিয়েছে। এর পর পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের শহরে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করা হয়। মুঘল-যুগের মসজিদটি একটি হিন্দু মন্দিরের জায়গায় নির্মিত বলে দাবি করার পরে কিছু পিটিশনের পরে বিষয়টি আইনি লড়াইয়ের কেন্দ্রে রয়েছে। হিংসতার ঘটনায় দায়ের করা এফআইআরে স্থানীয় সমাজবাদী পার্টির এমপি জিয়াউর রহমান, সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক মাহমুদের ছেলে সোহেল ইকবাল এবং ৭০০ জনেরও বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রশাসন বলেছে যে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বরাত দিয়ে বহিরাগতদের ওই এলাকায় যেতে দেবে না। নিষেধাজ্ঞার আদেশ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর আগে, সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দলকে জেলায় প্রবেশ করতে দেয়নি প্রশাসন। রাহুল-প্রিয়াঙ্কাকে আটকানোর বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। যোগী সরকারকে একযোগে বিঁধতে শুরু করেছে তারা।

Related Articles