পাজামার দড়ি ধরা ধর্ষণের চেষ্টা নয়: বিতর্কিত রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
Holding pyjama rope not attempted rape: Supreme Court stays controversial verdict

Truth Of Bengal: ১১ বছরের এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের মামলায় এলাহাবাদ হাই কোর্টের দেওয়া এক বিতর্কিত রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ে বলা হয়েছিল, স্তন খামচে ধরা বা পাজামার দড়ি টেনে ধরা ধর্ষণের চেষ্টা নয়। সুপ্রিম কোর্ট এই মন্তব্যকে ‘অসংবেদনশীল ও অমানবিক’ বলে উল্লেখ করেছে।
উত্তরপ্রদেশের কাশগঞ্জে ২০২১ সালে এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। তারা মেয়েটিকে রাস্তায় ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে জোর করে ধরে, তার স্তন চেপে ধরে এবং পাজামার দড়ি খুলে ফেলে। মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রা এক রায়ে জানান, শুধুমাত্র স্তন চেপে ধরা বা পাজামার দড়ি খোলা ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা হিসেবে গণ্য করা যাবে না। বরং এটি শারীরিক নিগ্রহ।
এই রায় প্রকাশের পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলায় হস্তক্ষেপ করে। বিচারপতি বিআর গবৈ এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ জানায়, “এই রায় অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এতে সংবেদনশীলতার অভাব রয়েছে। চার মাস ধরে বিচার বিশ্লেষণের পরও এই ধরনের রায় দেওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
বিচারপতির বেঞ্চ আরও বলে, “এই ধরনের রায় আদালতের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে। তাই আপাতত আমরা এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিচ্ছি।”
শীর্ষ আদালতের এই হস্তক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, “বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বজায় রাখতে কিছু রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া জরুরি।” তবে এই রায় যে সমাজে নারীদের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নকে নতুন করে সামনে এনেছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।