দেশ

রমরমিয়ে জাল অ্যান্টিবায়োটিকের কারবার, কাঠগড়ায় দেশের চার রাজ্যের হাসপাতাল

Dealing in fake antibiotics, hospitals in four states of the country in Kathgarh

Truth Of Bengal: ওষুধ কি প্রাণ বাঁচাবে, নাকি অকালে প্রাণ কাড়বে? যদি জানা যায় যে, সরকারি হাসপাতালে নার্স ও ডাক্তারদের হাত থেকে প্রাণদায়ী বলে যে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা হচ্ছে, সেটি আসলে প্রাণঘাতী, জাল এবং বিষাক্ত হতে পারে? যদি রোগ নিরাময়ের উপাদানের পরিবর্তে তাতে ট্যালকম পাউডার ও স্টার্চ মেশানো থাকে?

এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা সত্যিই ঘটেছে। উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র সহ বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরনের জাল ওষুধের ভয়ানক চক্র চলছিল। হরিদ্বারের একটি পশু-ওষুধের ল্যাবরেটরিতে এই ধরনের ভুয়ো ওষুধ তৈরি হত, যা আসলে গায়ে মাখার সস্তা পাউডার ও স্টার্চের মিশ্রণ ছিল। এই ‘ওষুধ’ বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হত এবং হাওয়ালা চক্রের মাধ্যমে মুম্বই থেকে সাহারানপুরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আসত। আইনের ফাঁক গলে এই অবৈধ ব্যবসা চলতে থাকে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নীতিন ভাণ্ডারকর নামে এক ড্রাগ ইনস্পেক্টরের হাতে এর অবসান ঘটে।

নাগপুরের কলমেশ্বরের এক গ্রামীণ হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে নীতিন প্রথম বুঝতে পারেন যে, অ্যান্টিবায়োটিকের নামে ভুয়ো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তিনি এফডিএ-তে ওষুধ সরবরাহকারী ও বণ্টনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এর ফলে অভিযুক্ত সংস্থাগুলিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর আবার একই ঘটনা ঘটে। এবার এই বিষয়ে ব্যাপক সাড়া পড়ে। এসপি (রুরাল) হর্ষ এ পোদ্দার ও আইপিএস অনিল মাসখে তদন্তের ভার নেন। তদন্তে ভয়ানক তথ্য উঠে আসে। ২০ সেপ্টেম্বর নাগপুর (গ্রামীণ) পুলিশ ১,২০০ পৃষ্ঠার বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়। তারপর জানা যায়, মহারাষ্ট্র জুড়ে হাসপাতালে ভুয়ো অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওয়ার্ধা, নানদেড়, থানে সহ বিভিন্ন জায়গায় এই চক্র সক্রিয় ছিল। এই চক্র শুধু মহারাষ্ট্রে নয়, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিশগড়েও জাল ওষুধ সরবরাহ করত।

তদন্তের প্রথম ধাপে হেমন্ত মুলে নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি টেন্ডার পেয়েছিলেন। এরপর সেই সূত্র অনুসরণ করে মিহির ত্রিবেদী, বিজয় চৌধুরী, গগন সিং, রবিন তানেজা, এবং রমণ তানেজাকে আটক করা হয়। হরিদ্বারের একটি পশু ল্যাবরেটরির সন্ধান পাওয়া যায়, যার মালিক অমিত ধীমান, যিনি ইতিমধ্যেই জেলে আছেন।