মণিপুর হিংসায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক, ফরেন্সিক রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের
Controversy over CM's role in Manipur violence, Supreme Court seeks forensic report

Truth Of Bengal: মণিপুরের সাম্প্রদায়িক হিংসায় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক চলছেই। বিশেষ করে একটি অডিয়ো টেপ ঘিরে কুকি সম্প্রদায়ের অভিযোগ, তাতে নাকি মুখ্যমন্ত্রীর নিজ মুখে হিংসায় ইন্ধন দেওয়ার ‘স্বীকারোক্তি’ রয়েছে। যদিও এই অডিয়োর সত্যতা যাচাই হয়নি, তবে এবার বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সরকারি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-তে অডিয়োটির বিস্তারিত পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
সোমবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি কুমার জানান, তিনি আগে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের নিমন্ত্রণে তাঁর বাড়িতে নৈশভোজে গিয়েছিলেন। এরপর মামলাকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, তাঁর এতে কোনো আপত্তি নেই।
প্রশান্ত ভূষণের দাবি, একটি বেসরকারি ফরেন্সিক সংস্থা ‘ট্রুথ ল্যাব্স’ ইতিমধ্যেই পরীক্ষা করে জানিয়েছে যে, অডিয়োটির কণ্ঠস্বর শতকরা ৯৩ ভাগ মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠের সঙ্গে মিলে গেছে। তাই সুপ্রিম কোর্ট এবার সরকারি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পুনরায় পরীক্ষা করিয়ে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
২০২৩ সালের শেষের দিকে অভিযোগ ওঠে, মণিপুরের গোষ্ঠীসংঘর্ষে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, একটি টেলি-কথোপকথন রেকর্ড করেছিলেন এক ‘হুইসলব্লোয়ার’, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নাকি স্বীকার করেছেন যে, তিনি সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছেন এবং অস্ত্র লুটকারীদের আশ্রয় দিয়েছেন। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কুকি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় এবং আদালত তদন্তের নির্দেশ দেয়।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরের মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। কিছুদিন শান্ত থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি কয়েকজন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা হয়, ফলে কার্ফু জারি করা হয় পাঁচটি জেলায়।
এমনকি, গত ডিসেম্বরেও মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির কাছেই বোমা উদ্ধার হয়, যার পর তাঁর নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। এখন সুপ্রিম কোর্টের ফরেন্সিক পরীক্ষার নির্দেশের পর মণিপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকেই নজর থাকছে সকলের।