ত্বকের ক্যানসার রোধ করে পুষ্টিগুণে ঠাসা চারমগজ
Various Benefits of Charmagaz

The Truth of Bengal, Mou Basu: ছোট্টো হলেও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ চারমগজের দানা। চারমগজ আসলে কোনো একটি দানা নয়, শশা, তরমুজ, কুমড়ো আর শিলা তরমুজের দানা একত্রে মিলিয়ে তৈরি হয় চারমগজ। ত্বকের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও কমায় চারমগজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ফ্যাটিঅ্যাসিড ভরপুর চারমগজ শরীরে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলস কমায়। দানা থেকে তৈরি তেলে পাওয়া যায় ফ্যাটি অ্যাসিড যা বলিরেখা, ফাইন লাইনস, ডার্ক সার্কেলস আর ত্বকের দাগছোপ কমায়। ত্বকের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। ত্বকের পোরস বা ফুটো বন্ধ হওয়া আটকায়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে চারমগজ। (২ টেবিল চামচ চারমগজ গুঁড়ো আর ১ টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে একটা ফেসমাস্ক বানান। মুখের চারিদিকে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। একদিন অন্তর এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন ত্বক উজ্জ্বল হবে।)
চারমগজে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আর খনিজ পদার্থ, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট আর প্রোটিন। এছাড়া আছে রাইবোফ্ল্যাভিন, থায়ামিন, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬ আর প্যান্টোথেনিক অ্যাসিডের মতো বিভিন্ন রকমের ভিটামিন বি। ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, তামার মতো খনিজ পদার্থ। ট্রিপ্টোফ্যান, আর্জিনিন, গ্লুটামিক অ্যাসিড আর লাইসিনের মতো বিভিন্ন বায়োঅ্যাক্টিভ পদার্থ।
★মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে চারমগজ। চারমগজ স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলে। স্নায়ুকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।মানসিক অস্থিরতা রোধ করে মনকে সচল ও শান্ত রাখে, ধৈর্য্য বাড়াতে সাহায্য করে চারমগজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
★হাইপোগ্লাইসেমিক গুণে সমৃদ্ধ চারমগজ রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। বিটা-প্যানক্রিয়াটিক কোষ যা ইনসুলিন নিঃসারণে সাহায্য করে তা বিশেষ ভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে চারমগজ খেলে। স্টার্চকে গ্লুকোজে ভেঙে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে চারমগজ। প্রতিদিন ২ চামচ চারমগজের দানা এক লিটার জলে এক ঘণ্টা ধরে ফোটান। ঠান্ডা করে খান। রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
★প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় চারমগজ হৃদযন্ত্রের যাবতীয় সমস্যা দূর করে। হৃদযন্ত্রের পেশি মজবুত করে। ধমনীতে কোলেস্টরল জমা আটকায়। আর্জিনিন, লাইসিনের মতো বায়োঅ্যাক্টিভ পদার্থ NEFA-র মতো নন-এস্টেরিফায়েড ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। তাই চারমগজ একদিকে যেমন রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা কমায় তেমনই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। কমায় হার্টব্লক, হৃদযন্ত্রে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনাও।
★আর্জিনিন, ট্রিপ্টোফ্যান, গ্লুটামিক অ্যাসিডের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড আছে চারমগজে যা আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না। এসব অ্যামিনো অ্যাসিড হৃদযন্ত্রের জন্য খুব ভালো। ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদযন্ত্রের জটিলতা তৈরি হতে দেয় না। ম্যাগনেসিয়াম হার্ট ভালো রাখে। বুক ধরফর করা, অস্থিরতা, অল্পতে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অনেকে। চারমগজ মিছরি আর দুধের সঙ্গে নিয়মিত খেলে এসব সমস্যা কমে।
★অপুষ্টির সমস্যা দূর করে চারমগজ। প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ আর ফ্যাটি অ্যাসিডের পাওয়ার হাউজ চারমগজ স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
★চুল পড়া রোধ করে চারমগজ। অতিরিক্ত চুল পড়লে ৫ গ্রাম চারমগজ গুঁড়ো, ১ গ্রাম আমলকি আর দেড় গ্রাম যষ্টিমধু চুলে লাগালে কয়েক দিনের মধ্যে চুল পড়ার সমস্যা দূর হয়। লাইসিন, আর্জিনিন, গ্লুটামিক অ্যাসিডের মতো প্রোটিন থাকায় চারমগজ চুলের জন্য খুব উপকারী। চারমগজের তেল খুব সহজে মাথার তালুতে শুষে যায় যা চুলের গোড়া মজবুত করে। তামা থাকায় চারমগজ মেলানিন পিগমেন্টকে স্টিমিউলেট করে যা চুলের অকালপক্বতা রোধ করে।পা ফাটার সমস্যা দূর করে। ত্বক নরম করে।
★সদ্য যাঁরা মা হয়েছেন তাঁদের মাতৃদুগ্ধর পরিমাণ বাড়ায় চারমগজ। দানায় থাকা লাইকোপিন স্পার্মের কাউন্ট বাড়ায়। চারমগজ কিডনির সমস্যা দূর করে। কিডনিতে পাথর জমা, ইউরিনারি ট্রাকে সংক্রমণ রোধ করে চারমগজের দানা। তবে বেশি পরিমাণে চারমগজ খেলে কিডনির সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।