পাকিস্তানের ‘রফতানি’তে বীতশ্রদ্ধ সৌদি, ইরাক, ইরান, ভারত, বেজায় খুশি চিন, কিন্তু কেন?
Pakistan export donkey to China

The Truth of Bengal: সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বিশ্বের সমস্ত দেশের হাল হকিকত এখন প্রকাশ্যে। কোন দেশের সঙ্গে কার কত ভালো সম্পর্ক, খারাপ সম্পর্ক এমনকী আত্মীক সম্পর্ক, তাও আজ এক লহমায় ধরা পড়ে। সারা বিশ্বে হয়তো একটি মাত্র দেশ, যে বিশ্বের কাছে এক অনন্য চরিত্র নিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছে।
পাকিস্তানের অর্থনীতির যা হাল, তা সবারই জানা। এমনকী তাদের দেশের একাংশ নাগরিকই দেশের নেতাদের জোকার ছাড়া আর কিছুই মনে করে না। কারণ, তাঁরা সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ায় শুধু ঋণ নেওয়ার জন্য। কিন্তু সেই ঋণ কীভাবে শোধ হবে, তার কোনও সুষ্ঠু পরিকল্পনা নেই। ফলত বিপর্যয়ের মুখে দেশের অর্থনীতি।
দেশের নাগরিকরা যে বিড়ম্বনায় রয়েছে, তা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। কিন্তু পাকিস্তানের এক সময়ের প্রিয় দেশগুলিই এখন বিপাকে। তার মধ্যে অন্যতম সৌদি আরব, ইরাক, ইরান আর ভারততো ছিলই আগে থেকে।
আসলে পাকিস্তানের জন্ম লগ্ন থেকে পাকিস্তার ভারতের উদ্দেশে একটি জিনিস আগাগোড়া রফতানি করে এসেছে, সেটি হল সন্ত্রাসবাদ। গত কয়েক দশক ধরেই প্রক্সি ওয়ার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতের মধ্যে। আর এই সমস্যা নিয়ে পশ্চিম হোক বা মধ্যপ্রাচ্য অথবা এশিয়ার কোনও দেশের মাথা ব্যাথা ছিল না, কিন্তু এবার হচ্ছে।
গত কয়েক বছরে পাকিস্তান মধ্যপ্রাচ্যে যেটি রফতানি শুরু করেছে, তা হল, পকেটমার এবং ভিখারি। আর এতেই বীতশ্রদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ। গত মাসেই, পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের এক সচিব জুলফিকার হায়দার সংসদীয় প্যানেলের আলোচনা যা বক্তব্য পেশ করেছিলেন, তা রীতিমতো বেকায়দায় ফেলেছে পাকিস্তান সরকারকে। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে স্কিলড এবং আনস্কিল্ড লেবার হিসেবে যাদের পাঠায়, তাদের ৯০ শতাংশই হয় পকেটমার নয়তো ভিখারি।
তিনি বলেছেন, পাকিস্তান থেকে প্রতি বছর হজ যাত্রার জন্য বহু মুসলিম ধর্মলম্বী সৌদি যায়, সেখানে গিয়ে তারা আল-মসজিদ-আল-হারামের সামনে ভিক্ষে করে। এমনকী ওই শুভযাত্রায় সৌদিতে যত পকেটমার ধরা পড়েছে, তার ৯০ শতাংশই পাকিস্তানি। পরিসংখ্যান বলছে, ইরাক ও সৌদিতে যত কারাগার রয়েছে, সেখানেও তাৎপর্যপূর্ণভাবে পাকিস্তানিতে ভর্তি। গত কয়েক বছরে ইরাক, ইরান এবং সৌদি পাকিস্তানের নাগরিকদের নিয়ে এতোটাই বীতশ্রদ্ধ যে, তারা পাক সরকারকে একাদিকবার চিঠি লিখেছে কড়া ভাষায়। তারা স্পষ্ট ভাষায় লিখেছে, পাকিস্তান তাদের দেশে ক্রিমিনালদের পাঠাচ্ছে। তাদের কয়েদখানাগুলি পাকিস্তানি ভিখারি আর পকেটমারেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে।
এতো গেল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির যন্ত্রণা পাকিস্তানি ভিখারি আর পকেটমারদের নিয়ে। তবে পাকিস্তানের রফতানি নীতিতে ভারত, বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি ক্ষুব্ধ হলেও, চিন একটি জিনিস পাকিস্তান থেকে আমদানি করে বেজায় খুশি। সেটি হল গাধা।
হ্যাঁর চিন গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ গাধা আমদানি করছে। পাকিস্তানেও এটি লাভজনক ব্যবসা দেখা দেওয়া, গাধার চাষও শুরু করেছেন অনেকে। সাম্প্রতিক প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলছে, ২০১৯-২০ সালে পাকিস্তানে গাধা ছিল ৫০ লক্ষ ৭০ হাজার। সেই জায়গায় ২০২২-২৩ সালে গাধা সংখ্যা বেড়েছে আরও ১০ হাজার। সারা বিশ্বে গাধা আমদানির ক্ষেত্রে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে। আর পাকিস্তান গাধা রফতানির ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থান দখল করে আছে। এখন প্রশ্ন, চিন এতো গাধা আমদানি করে কেন?
চিনের অফিসিয়াল রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গাধার চামড়া থেকে এক ধরণের জিলেটিন পাওয়া যায়, যা চিনের ট্র্যাডিশনাল ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। এমনকী গাধা মাংস বহু মানুষ খেয়েও থাকেন। গাধা রফতানির ক্ষেত্রে পাক সরকারের একাংশ খুশি হলেও, দেশের একটা অংশের নেতা সন্তুষ্ট নয়। তাঁদের মত, দেশে এতো কিছু থাকতে, আমাদের লজ্জা থাকা উচিত, অবশেষে গাধা রফতানি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে নাম উঠে আসছে।