ফিচার

কেন অন্নপূর্ণাকে কাশীর রানি মা বলা হয় জানেন? কী মাহাত্ম্য লুকিয়ে রয়েছে এর পিছনে জানুন বিস্তারিত

Do you know why Annapurna is called the Queen Mother of Kashi

The Truth of Bengal: ঐতিহ্য আর আধুনিকতা হাত ধরাধরি করে চলে কাশী বা বেনারসে। কাশী পরিচিত বিশ্বনাথ মন্দিরের জন্য। কিন্তু এই কাশীতে রয়েছে নবদুর্গার মন্দিরও। শ্রীশ্রী চণ্ডীতে বর্ণিত দেবী দুর্গার যে রূপের বর্ণনা রয়েছে কাশীতে সেই নয় রূপে অবস্থান করছেন দেবী দুর্গা। তার অন্যতম হল মা অন্নপূর্ণা। কাশীর রানি বলা হয় মা অন্নপূর্ণাকে। খাদ্য দিয়ে মা অন্নপূর্ণা কাশীবাসীর পেট ভরান বলে মনে করা হয়। দশাশ্বমেধ রোডে বিশ্বনাথ গলির মুখে বাঁদিকে রয়েছে অন্নপূর্ণা মহাগৌরী মন্দির। লালপাথরের পাঁচিল দিয়ে ঘেরা মন্দির। প্রবেশপথ পেতলের। তারওপর দেবীযন্ত্র খোদাই করা হয়েছে। ভেতরে লালপাথরের ১২ থামবিশিষ্ট নাটমন্দির। থামে নানান কারুকাজ রয়েছে। নাটমন্দিরের পরেই রয়েছে গর্ভগৃহ। ছোট্ট গর্ভগৃহের ৩টি দরজা। ভেতরে উঁচু বেদীর ওপর আসীন মা অন্নপূর্ণা। মায়ের মুখ ভারী করুণাময়ী। তবে একটি সোনার মুখোশ দিয়ে মুখ আবৃত। আসল মূর্তি কালো  কষ্টিপাথরের। মাথায় সোনার মুকুট।

দেবীর এক হাতে হাতা, অন্য হাতে ছোট্ট হাঁড়ি। চুল চুড়ো করে বাঁধা। দেবীর আসনের নীচে রয়েছে অষ্টধাতুর দেবীযন্ত্র। ধনতেরাসের দিন থেকে প্রতিপদ পর্যন্ত মন্দিরের পেছনে দোতলায় সোনার অন্নপূর্ণা প্রতিমা দর্শন করা যায়। সোনার দেবী অন্নপূর্ণার পাশে থাকেন শ্রীদেবী ও ভূদেবী। পাশে থাকেন দেবী লক্ষ্মী ও সরস্বতীও। ডানদিকে নৃত্যরত অবস্থায় রয়েছেন সোনার বাঘছাল পরা দেবাদিদেব মহাদেব। তাঁর একহাতে ত্রিশূল, অন্যহাতে ভিক্ষাপাত্র। অন্নকূট উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হয়। মন্দিরের ৪ কোণে রয়েছে ৪টি প্রাচীন বিগ্রহের মন্দির। প্রতিদিন ভোর ৪টে থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আর সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে। অন্নপূর্ণা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আর এক পৌরাণিক কাহিনী।

পুরান মতে বিবাহের পর শিব পার্বতী সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। দু’জনের মধ্যে মতবিরোধে দেবী পার্বতী কৈলাশত্যাগ করে চলে আসেন। সেই সময় দেখা যায় মহামারি, খাদ্য কষ্ট। ভক্তরা আকুল হয়ে পড়ে, তারা দেবাদীদেবকে ডাকতে থাকে। সেই সময় ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মহাদেব। কিন্তু দেবীর মায়ায় কোথাও ভিক্ষা জোটে না তাঁর। তখন শোনা যায় কাশিতে এক নারী সকলকে অন্ন দান করছেন। ভোলানাথ সেখানে উপস্থিত হলে, ভোলেনাথের কিন্তু দেবীকে চিনতে একটুও অসুবিধা হয় না। মহাদেব মায়ের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। সেই ভিক্ষা গ্রহণ করে মহামারী এবং খাদ্য ভাব থেকে ভক্তকুলকে রক্ষা করেন তিনি। এরপর কাশিতে মা অন্নপূর্ণার মন্দিরের স্থাপন করা হয়।চৈত্র মাসে শুক্লা অষ্টমী তিথিতে কাশীতে আভির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী অন্নপূর্ণা।

Related Articles