শিক্ষা

গয়না বন্ধক রেখে পড়াশোনা, গরিব চাষির মেয়ে আজ লোকো পাইলট

Studied by mortgaging jewellery, poor farmer's daughter is now a loco pilot

The Truth Of Bengal: লক্ষ্য ছিল একটাই, দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে জীবন সংগ্রামে উত্তীর্ণ হওয়া। অন্য কারোর পরিচয়ে নয়, নিজের পরিচয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচা। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। কিন্তু স্বপ্ন, ভালো পড়াশোনা করে সরকারি চাকরি করা। তাই বহুবার ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষায় বসেন কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। অবশেষে সেই দরিদ্র পরিবারের কন্যা আসমাতারা খাতুন আজ একজন রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট।

আসমাতারা রসুলপুর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে মহেশ্বরপুর হাই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর ধনিয়াখালি মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর দুর্গাপুর বেঙ্গল কলেজে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিল আসমাতারা। তাই যত কষ্টই হোক না কেন তার পরিবার কোনমতে মেয়ের পড়াশোনায় কোনো খামতি রাখেননি। মেয়েকে তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য মেয়ের সাথে সাথেই অক্লান্ত পরিশ্রম করেন মা নুরজাহান বেগম এবং বাবা জাকির হোসেন। বাবা ছিলেন প্রত্যন্ত গ্রামের একজন চাষী। মাত্র ২ বিঘা জমি চাষ করেই তিন সন্তানকে নিয়ে তাদের পরিবারের সবার পেট চলত। এত দারিদ্রতার মধ্যে মেয়েকে কোচিং সেন্টারে দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই মেয়ে অনলাইনে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর বহুবার ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষাতে বসেন কিন্তু বারবার ব্যর্থ হন। তাই অবশেষে ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর মা-বাবা প্রায় সমস্ত সোনার গয়না বন্ধক রেখেছিলেন শুধুমাত্র মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য। তাতেও খরচ না চললে অবশেষে গবাদি পশুর দুধ বিক্রি করে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালান। আসমাতারা জানান, ছোট থেকেই তিনি সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় চাকরির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনি সফল হননি। অবশেষে ভেঙ্গে না পড়ে ফের ঘুরে দাঁড়ান তিনি। এরপর পুনরায় ব্যাংক এর পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কলকাতায় চলে আসেন।

পরবর্তীকালে, হার না মেনে তিনি রেলের চাকরির জন্য যোগাযোগ করেন। বর্তমানে সেই লড়াকু মহিলা এখন রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকোপাইলট। ছোট থেকেই বহু ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। কিন্তু কোনভাবেই মাথা নত না করে নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন তিনি। টাকা পয়সার অভাবে টিউশন নিতে না পারায় ক্লাস নাইন পর্যন্ত মায়ের কাছেই পড়াশোনা শিখেছেন তিনি।

FREE ACCESS

Related Articles