
The Truth Of Bengal: বিয়ের পর স্বামীকে ঠকিয়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে পালালো মহিলা কিংবা বিবাহিতা স্ত্রীকে ঠকিয়ে অন্য মহিলার সঙ্গে ঘর বেঁধেছে স্বামী এইসব খবরে যখন ভরপুর সোশ্যাল মিডিয়া। ঠিক সেই প্রেক্ষাপটে দাড়িয়ে একজন প্রকৃত মা এবং স্ত্রীয়ের দায়িত্ব কীভাবে পালন করতে হয় তা গোটা দেশকে শিখিয়েছিলেন বৃষ্টি পাল নামে এক লড়াকু মহিলা।
তীব্র গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসী। এমতাবস্থায় সারা বাংলা চাইছে স্বস্তির বৃষ্টি। আর এইদিকে বৃষ্টি পাল নামে বাংলার এক গৃহবধূ এই প্রবল গরমেও হাতে ভারী ব্যাগ নিয়ে ট্রেনে বাসে চড়ে শাড়ি এবং জামাকাপড় বিক্রি করছেন। বিয়ের পর বেসরকারি অফিসে কর্মরত স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ার পর পরিবারের মুখে অন্য যোগাতে শুরু করেছিলেন এই কাজ। এরপর ভূগোলে মাস্টার্স করা এই শিক্ষিত গৃহবধূকে সংসার বাঁচাতে নামতে হয়েছিল পথে। বাঁকুড়ার বৃষ্টি পালের ধারণা, সংসার খরচ চালানোর দায়িত্ব শুধুমাত্র পুরুষদের নয়। মেয়েরাও পারে স্বামীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রোজগার করতে।
বৃষ্টির সকাল শুরু হয় সবজি কেটে, বাচ্চাদের পড়িয়ে, রান্না করে, বয়স্ক শাশুড়িকে টিফিন খাইয়ে। এরপর অর্থ উপার্জনের জন্য বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। সকাল সাড়ে নটা নাগাদ হাতে ভারি ভারি দুটো ব্যাগ আর কাঁধে একটা পিঠ ব্যাগ নিয়ে বৃষ্টি রওনা দেয় স্টেশনের উদ্দেশ্যে। লক্ষ্য একটাই, ট্রেনের প্যাসেঞ্জারদের কাছে শাড়ি এবং জামা কাপড় বিক্রি করে পরিবারের মুখে অন্ন যোগানো। অফিস টাইমের পর বাড়ি না ফিরে তিনি উঠে পড়েন লোকাল বাসে। সেখানে তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে চলে টিকে থাকার লড়াই।
বৃষ্টির জানায়, ” যখন আমার স্বামীর চাকরি চলে যায় তখন ভেবেছিলাম কিভাবে সংসারটা চালাতে পারবো। মনে একটাই কথা এসেছিল চিন্তা করে বাড়িতে বসে থাকলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্বামীর এই দুঃসময় পাশে থেকে সাহায্য করবো। আমার পরিবারের সকলে আমাকে খুব সাপোর্ট করে তাইতো আমি আজও হাসিমুখে সব সইতে পারি।”
বৃষ্টির এই লড়াই প্রমাণ করে দেয় “আমরা নারী, আমরা পারি”। মেয়েরা আজ চাইলে সব কিছুই করতে পারে। স্বামীর দুঃসময়ে পাশে থেকে যে মেয়েটা আজও অনবরত লড়াই করে চলেছে তাকে ট্রুথ অফ বেঙ্গলের পক্ষ থেকে জানাই কুর্নিস। ঘরে ঘরে আপনার মত গৃহ লক্ষীর আবির্ভাব হোক।