শিক্ষা

ছেলেবেলায় চাষবাস সামলানো এক সামান্য ছেলে আজ IAS

A small boy who managed farming as a child is now an IAS

The Truth Of Bengal : জীবন যুদ্ধে সফল হওয়া সহজ নয় ঠিকই, কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার পথ যত দুর্গম হয় ততই সফলতায় দ্বিগুণ আনন্দ মেলে। সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি হল কঠোর পরিশ্রম। বাবার মৃত্যুর পর ছেলেকে মাঠে কাজ করতে হয়েছে মায়ের সাথে। তবুও কোন কিছুর জন্য থেমে থাকেনি তার লড়াই। দীর্ঘ ১৯ বছর লড়াইয়ের পর অবশেষে IAS হয়ে নজির গড়লেন এক যুবক। ট্রুথ অফ বেঙ্গলের পাঠকদের জন্য রইল এমনই এক লড়াকু যুবকের গল্প।

আজকের গল্প, এলামভবত নামে এক যুবককে নিয়ে। তার বাবা হলেন গ্রামের প্রথম স্নাতক, যিনি ছিলেন গ্রাম প্রশাসনিক আধিকারিক আর মা ছিলেন একজন সমাজকর্মী। এমতাবস্থায় অভাব কি জিনিস তা কোনদিন তাঁর বাবা-মা বুঝতে দেননি এলামভবতকে। এভাবেই হেঁসে খেলে চলছিল দিনকাল। হঠাৎ একদিন তাদের পরিবারে ঘনিয়ে এল কালো ছায়া। ১৯৯৭ সালে এলামভবতের বাবার মৃত্যু হয়। এই অবস্থায় তাঁর জীবনে আসে নয়া মোড়। এক নিমেষেই পাল্টে যায় তার জীবন। কঠিন পরিস্থিতির সামাল দিতে এবং আর্থিক সংকট মেটাতে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়াশোনা ছেড়ে তিনি বাধ্য হন মায়ের সাথে মাঠে গিয়ে কাজ করতে। তবে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলেও পড়াশোনা বন্ধ করেননি তিনি। হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতেন। এরপর মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে স্নাতকের পর সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন এই লড়াকু যুবক।

বহুবার চাকরির চেষ্টা করেও প্রত্যেক বারই ব্যর্থ হন এই মেধাবী ছাত্র। এদিকে ধীরে ধীরে বয়স বাড়তে থাকায় বেকারত্বের কষ্ট যেন কুরে কুরে খাচ্ছিল তাঁকে। এত কষ্টের মধ্যেও তিনি স্বপ্ন দেখতেন একদিন সফল IAS অফিসার হবেন। এতটাই আর্থিক সংকট ছিল যে UPSC এর পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বইও ছিল না তার কাছে। তাই অবশেষে পাবলিক লাইব্রেরীতে পড়াশোনা চালিয়ে যান তিনি। তারপরে তামিলনাড়ুর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একাধিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও তিনি স্বপ্ন দেখতেন শুধুমাত্র একজন সফল IAS অফিসার হওয়ার। শেষমেষ রাজ্য সরকার গ্রুপ ১ সার্ভিসে জয়েন করার পরেও তিনি তার প্রস্তুতিতে ছিলেন অত্যন্ত ব্যস্ত। IAS পরীক্ষায় তিনি মেইনসে ৫ বার এবং ইন্টারভিউতে ৩ বার ব্যর্থ হন। এরপর বহুবার ব্যর্থতার পর অবশেষে ২০১৫ সালে IAS হওয়ার জন্য শেষ চেষ্টা করেন তিনি। শেষবারের প্রচেষ্টায় বাজিমাত করে সফল হন এলামভবত। তিনি IAS সর্বভারতীয়তে ১১৭ তম স্থান দখল করেন। আজ তিনি একজন সফল IAS অফিসার।

Related Articles