সম্পাদকীয়

মুখ্যমন্ত্রীর বোধোদয়ের পর কি শান্তি ফিরবে?

Will peace return after the Chief Minister's enlightenment?

Truth Of Bengal: গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে জ্বলছে রাজ্য। কয়েকশো মানুষের মৃত্যু। গৃহহীন হয়ে ত্রাণ শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কোনও চেষ্টা দেখা যায়নি প্রশাসনকে। কেন্দ্রও উদাসীন ছিল। অর্থাৎ একটা অরাজকতা চলেছে মণিপুরে। এখনও চলছে। সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর এখন প্রশাসক হিসেবে তাঁর যে ভূমিকা ছিল, সেই সম্পর্কে উপলব্ধি হয়েছে।

বছরের শেষ দিনে রাজ্যবাসীর কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রাজ্যের মানুষের উদ্দেশে তিনি বললেন, ‘ক্ষমা করুন এবং অতীত ভুলে যান। মণিপুরে শান্তি ফিরবে।” ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ছড়ায়, যা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজ্যে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর।

বারবার জারি করা হয়েছে কার্ফু। ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিরোধীদের তরফে সেই রাজ্যে গিয়ে বারবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। সেই সঙ্গে দাবি ওঠে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের যাওয়ার। তবে কেন্দ্রের তরফে সাড়া দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। রাজ্যের চলতে থাকা হিংসা নিয়ন্ত্রণে ও শান্তি ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী ব্যর্থ বলে দাবি বিরোধীদের। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, দীর্ঘ সময় ধরে মণিপুরে হিংসা চলার কারণ মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বে রাজ্যের বিজেপি সরকার এবং কেন্দ্রের উদাসীনতা। হিংসা নিয়ন্ত্রণ করতে কড়া পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্রের সরকার।

এমন অবস্থায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন তাতে কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ইম্ফলে একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “গোটা বছর দুর্ভাগ্যজনক কেটেছে আমাদের। গত বছরের ৩ মে থেকে যা ঘটে চলেছে রাজ্যে তার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি আমি। অনেকেই প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন। আমি অনুতপ্ত। ক্ষমা চাইছি। কিন্তু গত তিন-চার মাসের শান্তি পরিস্থিতি দেখে আমার আশা যে ২০২৫-এর মধ্যে রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরবে।” নতুন বছরে সত্যিই কি শান্তি ফিরবে মণিপুরে? সেই শান্তি ফেরানো চ্যালেঞ্জ সরকারের কাছে।

Related Articles