সম্পাদকীয়

নিজামের শহরে বাংলার ফুটবল গরিমার কি আজ পুনঃপ্রতিষ্ঠা

Is Bengal's football glory being restored in the Nizam's city today?

Truth Of Bengal: জয়ন্ত চক্রবর্তী: মনে পড়ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সেই অমোঘ বাণী—‘তুমি সাহসী প্রদ্যুত দত্তর ছেলে, তুমি অনির্বাণ পারবে বাংলার হারানো গরিমা ফিরিয়ে আনতে। কয়েক মাস আগে একটি মঞ্চ থেকে আইএফএ-এর সচিব অনির্বাণ দত্তকে মুখ্যমন্ত্রীর বলা কথাগুলি আজ বড় বেশি করে মনে পড়ছে। আজ মঙ্গলবার নিজামের শহর হায়দরাবাদে বাংলা সন্তোষ ট্রফি বা জাতীয় ফুটবল এর ফাইনালে খেলতে নামছে কেরলের বিরুদ্ধে।

সঞ্জয় সেনের ছেলেরা সন্তোষ ট্রফি জিতে বাংলার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের অভিজ্ঞান তুলে ধরতে পারবে তো? চারদিকে বাংলার ফুটবল নিয়ে গেল গেল একটি রব। আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্তর এবার প্রমাণ দেওয়ার পালা যে তিনি কলকাতার প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে ভূমি পুত্রদের খেলার সুযোগ দিয়ে কিছু ভুল করেননি। সব ডিভিশন থেকে খেলোয়াড় নিয়ে টিম অনির্বাণ বাংলা দলটি গড়েছে। সঞ্জয় সেনকে কোচ করেছে। তার ডিভিডেন্ট পাওয়ার সময় এসে গিয়েছে। বছরের শেষ দিনটিতে বাংলার ফুটবলে ২০২৫-এর সুপবন বয়ে যাওয়ার আশা এখন বাংলার প্রতিটি ফুটবল অনুরাগীর।

লোকের মুখে মুখে এখন নরহরি শ্রেষ্ঠ, রবি হাঁসদা, মনোতোষ মাঝিদের নাম। কে চিনতো এদের কয়েক দিন আগেও? অনির্বাণ আর সঞ্জয়ের কৃতিত্ব এই সব অজ্ঞাত, অখ্যাতদের তুলে আনার জন্যে। রবি হাঁসদা, মহম্মদ হাবিবের চুয়ান্ন বছরের রেকর্ড ভাঙবার মুখে। চুয়ান্ন বছর আগে হাবিব সন্তোষ ট্রফির একটি আসরে এগারোটি গোল করেছিলেন, রবিবার সেমিফাইনালে করা জোড়া গোলের সুবাদে রবি হাঁসদা ছুঁয়েছে হাবিবকে। ফাইনালে একটি গোল করলেই এই আদিবাসী যুবক ফুটবলের কিংবাদন্তিকে অতিক্রম করবে।

প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকে খুঁজে এনে রবি হাঁসদার মটো ছেলেকে ফুটবলের গজদন্ত খচিত মিনারে বসিয়ে দেওয়া কি সহজ কথা? তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম বাংলা আজ মঙ্গলবার হারলো। তাতেও কি মুছে যাবে কলকাতার ন্যাচারাল টার্ফ-এ খেলা শুরু করে হয়দারাবাদের ডেকান এরিয়ার অস্ট্রোটার্ফ-এর মাঠ ঘুরে গড়চউলির মাঠের দুরন্ত সংগ্রামের কাহিনি? বাংলা আজ চ্যাম্পিয়ন হলে সাত চল্লিশ বারের সন্তোষ ট্রফির মধ্যে তেত্রিশ বারই চ্যাম্পিয়ন হবে। একসময় সন্তোষ ট্রফিতে মনোপলি ছিল বাংলার। সঞ্জয় সেনের দল কি আজ মঙ্গলবার সেই গরিমা ফিরিয়ে আনতে পারবে?

Related Articles