সম্পাদকীয়

আইনের দাঁড়িপাল্লায় ফাঁসি-আজীবন সাজা

Death penalty-life sentence on the scales of law

Truth Of Bengal: গোটা দেশ অপেক্ষায় ছিল কী রায় হয় আরজি কর মামলায়, তা দেখার জন্য। দোষী সঞ্জয়ের ফাঁসি না যাবজ্জীবন- তা নিয়ে চলে তর্কবিতর্ক। সোমবার রায় ঘোষণা হতেই দেখা যায়, দোষী সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। তিলোত্তমার পরিবার তো বটেই, গোটা দেশ যেখানে দোষী সঞ্জয়ের ফাঁসির সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল, সেখানে বিচারক কেন দোষীকে ফাঁসির সাজা দিলেন না? সাজা ঘোষণার আগে বিষয়টি স্পষ্ট করেন বিচারক। এই ঘটনা ‘বিরলতম’ নয় বলে জানান বিচারক।

নির্যাতিতার পরিবার ও সিবিআই-এর তরফ থেকে সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবি তোলা হয়েছিল। আদালত বলেছে, এই বিষয়টা বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়। সেই কারণে ফাঁসি অর্থাৎ ডেথ সেনটেস্ট বা ক্যাপিটাল সেনটেন্স দেয়নি আদালত। বিচারক রায়ে বলেন, ‘আমি ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী ৬৪ নম্বর ধারায় ধর্ষণ, ৬৬ নম্বর ধারায় ধর্ষণজনিত আঘাতের কারণে মৃত্যু, ১০৩(১) খুনে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলাম।’ শিয়ালদা কোর্টের বিচারক অনির্বাণ দাসের নির্দেশ, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করতে হবে সঞ্জয় রায়কে। কেন ফাঁসি দেওয়া হল না? তার কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি।

সব শুনে বিচারক জানিয়ে দেন, আরজি কর কাণ্ড বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ বলে তিনি মনে করছেন না। আর তাই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারক সঞ্জয়কে উদ্দেশে বলেন, ‘আমৃত্যু কারাবাসে থাকতে হবে আপনাকে।’ সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই। যা প্রমাণ মিলেছে সবটাই ‘সারকামস্টেনশিয়াল এভিডেন্স’।

ভিসেরা রিপোর্ট আসেনি। রায়দানের সময় এই সমস্ত তথ্যই আইনের দাঁড়িপাল্লায় রেখে বিচার করেন বিচারক। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে একশো শতাংশ সংশয়মুক্ত থাকতে হয়। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় এমন সংশয় থাকলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না। সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছে বলে মনে করছে আইনজীবী মহল। তবে রাজ্য মনে করছে এই ঘটনাটি অবশ্যই বিরলতম। সেই জন্য ফাঁসির দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। যে মামলা গৃহীত হয়েছে।

Related Articles