মকর সংক্রান্তির পুণ্য লগ্নে চারশো বছরের ঐতিহ্যবাহী কেন্দুলি মেলা, অজয় নদের পাড়ে ভক্ত সমাগম
Traditional Kenduli fair

The Truth of Bengal: মহা সমারোহে শুরু হল জয়দেব কেঁদুলি মেলা। মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে বীরভূম জেলার জয়দেব কেঁদুলিতে এই মেলার সূচনা হয়। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে কাকভোর থেকেই শুরু হয় পুণ্যস্নান। লাখো মানুষের ভিড়ে জমে ওঠে মেলা প্রাঙ্গন। কনকনে ঠান্ডায় সবাই জলে নেমে স্নান সারেন। গুরুত্ব ও ভিড়ের নিরিখে এই রাজ্যে গঙ্গাসাগর মেলার পরে আছে জয়দেব কেঁদুলি মেলা। এই মেলার মূল আকর্ষণ আখড়া। সেখানে প্রতিটি আখড়াতে বসে বাউল-ফকির ও কীর্তন গানের আসর। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সমাগমে এই মিলন ক্ষেত্র এখন গমগম করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বীরভূম জেলা পুলিশ সমস্ত আয়োজন করে মেলাকে কেন্দ্র করে।
কবি জয়দেবের স্মৃতিবিজড়িত এই মেলা কয়েক শো বছরের পুরনো। শোনা যায়, মকর সংক্রান্তির দিন কবি জয়দেব ভোরবেলা গঙ্গাস্নানে কাটোয়ায় যেতেন। এক বার অসুস্থতার কারণে তিনি গঙ্গাস্নানে যেতে পারেননি। তারজন্য মনে দুঃখ হয়। মকর সংক্রান্তির আগের রাতে কবি এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেন। তিনি দেখলেন মকরবাহিনী গঙ্গা হেসে তাঁকে বলছেন, ‘দুঃখ করো না। তুমি যেতে না পারলে আমিই আসব অজয়ের স্রোত বেয়ে কদমখণ্ডীর ঘাটে।
তোমার স্পর্শ পেয়ে আমি ধন্য হব।‘ কবি বুঝতে পারলেন যে মা গঙ্গা স্বপ্নে তাঁকে জানিয়েছিলেন তাঁর আগমনবার্তা। মা-গঙ্গার দেখা পেয়ে উল্লসিত অভিভূত হয়ে ওঠেন কবি জয়দেব। আনন্দে আপ্লুত হয়ে অনেক সাধু-সন্ন্যাসীর নিমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি সেখানে মহোৎসবের আয়োজন করে ফেলেন। এখন এই মেলার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশে। ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলির অন্যতম এই মেলা। এছাড়া যারা ভিড়ের কারণে গঙ্গাসাগর যেতে চান না তাদের কাছে খুব প্রিয় এই মেলা। অজয় নদে পুণ্যস্নানের পাশাপাশি এখানে বাড়তি পাওনা বাউল-ফকির ও কীর্তন গানের আসর। মাটির গানের সঙ্গ পেতে তাই অনেকে হাজির হন এই মেলায়।