মোহনবাগান ফাইনালে জিতলেও, দলের খেলায় আমি একেবারেই খুশি নই
Even though Mohun Bagan won the final, I am not at all happy with the team's performance.

Truth Of Bengal: দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন জাতীয় গোলরক্ষক: মোহনবাগান চলতি আইএসএল-এ লিগ-শিল্ড খেতাব জয় করার পর এবার আইএসএল কাপও জয় করেছে। ঘরের মাঠে এই ট্রফি জয় এবারই প্রথম। তারজন্য অবশ্যই মোলিনার দলকে আমি শুভেচ্ছা জানাব।
ফাইনাল ম্যাচের খেলা নিয়ে যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, ম্যাচটা কেমন দেখলেন? তাঁদের উদ্দেশে বলি, শনিবার মোহনবাগান যুবভারতীতে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে যে ম্যাচটা খেলেছে, তাতে আমি অন্তত খুশি হইনি। অবশ্যই তার পিছনে কারণ রয়েছে। প্রথমত বলি, বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ম্যাচটা জয়ের পর অনেক প্রাক্তন ফুটবলাররা বলেছেন, জয়টা মোহনবাগানের কাছে শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল মাত্র। আমি তাঁদের এই মতকে সমর্থন করতে পারছি না।
কেন পারছি না তার উদাহরণ দিয়ে বলছি, সুনীলদের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকে দ্বিতীয়ার্ধের বেশ কিছুটা সময় মোহনবাগানের মাঝমাঠ এবং ফরোয়ার্ড বলে কিছু ছিল না। সেই সময় দাপটের সঙ্গে ফুটবল খেলেছিল বেঙ্গালুরু। আমি অবাক ভাবছিলাম এই টিমটা লিগে এত ভাল পারফরম্যান্স করে শীর্ষে থেকে চ্যাম্পিয়ন হল, হঠাৎ করে ২৫ দিনের ফারাকে টিমটার কি এমন হল যে এইরকম পারফরম্যান্স করছে।
সেমিফাইনালেও জামশেদপুরের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছে ঠিক কথাই, কিন্তু নিজেদের খেলার ধারে-কাছে ছিল না মোলিনার দল। ফাইনালেও এর ব্যতিক্রম হল না। সত্যি কথা বলতে গেলে মোহনবাগান শনিবারের ম্যাচে জয়লাভ করেছে ভাগ্যের সহায়তায়। যদি এটা না হত তাহলে বলার কিছুই থাকত না।
দ্বিতীয়ত, প্রথমার্ধে যদি শুভাশিসের হাতে লাগা বলটা মোহনবাগানের বিপক্ষে রেফারি পেনাল্টি দিতেন, এবং এর আগে সুনীলরা যদি গোলের সুযোগগুলো নষ্ট না করতেন, তা হলে মোলিনার দল কিন্তু ওখানেই পিছিয়ে পড়ত। কিন্তু ভাগ্য ভাল রেফারি সেটা পেনাল্টি দেননি। অথচ চিঙ্গালসানার হাতে লাগা মাত্র পেনাল্টি পেল বাগান। ভাগ্য একেই বলে।
এরপর যেটা বলতে হয়, শনিবারের ম্যাচে বাগান কোচের দল নির্বাচন আমাকে এক কথায় হতাশ করেছে। কেন করেছে, তার কারণ হিসাবে আমার মনে হয়েছে বিগত ২৪টা ম্যাচে মোলিনা দলের মধ্যে যে পরিবর্তনগুলো করেছেন, সেগুলি ক্লিক করে গেছিল বলেই সবাই বলছেন ঠিক পরিবর্তন হয়েছে। আর তা যদি না হত, তাহলে তাঁর পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব হতেন।
আমি সেই পথে হাঁটতে রাজি নই। কেননা সোজাকে সোজা এবং কালোকে কালো বলতে ভয় পাই না। আমার আশা ছিল ফাইনাল ম্যাচে বাগানের কোচ হয়ত কামিন্সের বদলে দিমিত্রিকে জুড়ে দেবেন ম্যাকলারেনের সঙ্গে। পাশাপাশি থাপার বদলে সাহালকে ব্যবহার করা উচিত ছিল।
কেননা তাঁর বোঝা উচিত ছিল স্ট্রুয়ার্টের যে খেলাটা খেলা দরকার সেটা সে করছে না। ছোট ছোট বল নিয়ে শুধু ড্রিবলিং করছে। অন্য দিকে কামিন্সের বলের কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই। ভাল পাস তাঁর পা থেকে কবে শেষ দেখা গিয়েছে, তা কেউ বলতে পারবেন না। কবে একটা ফ্রি-কিকে গোল করবেন তাই জন্য তাঁকে নিয়ে অযথা কেন তাঁকে ব্যবহার করবো?
আর একটা কথা মোলিনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এর আগের ম্যাচগুলোতে ম্যাকলারেনকে অনেক আগে থেকেই তাঁর ফিট করে তোলা উচিত ছিল। কেননা তাঁর বোঝা উচিত ছিল, ম্যাকলারেন যত দিন যাবে, ততই ও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। যেমনটা হল শনিবার। ভাগ্য ভাল ওকে ওই সময় বসিয়ে দেননি। না হলে গোলটাও হয়ত আসত না।