
Truth Of Bengal: একটি গোটা দিন আমাদের জন্য ভাবতে বেশ ভালই লাগে। এই দিনে আমরা একটা স্পেশ্যাল ভালবাসা বা সম্মান পাই। নারীর জন্য শুধু একটা দিন? মা ঠাকুমা কাকিমা দিদিমা মাসি পিসি দিদি বোন মেয়ে বউ সারাটা জীবন আমাদের জন্য ভাবে আমাদের জন্য করে তাঁদের জন্য মাত্র একটা দিন?
সত্যি কথা বলতে কী একটাও স্পেশ্যাল দিনের প্রয়োজন নেই। শুধু তাঁদের নিজের মতো করে একটু বাঁচার অধিকার দেওয়া হোক। নারী স্বাধীনতার নামে যে নাটক চলছে সেটা বন্ধ হোক। একজন মহিলা যতই লেখা পড়া শিখুন যতই বড় চাকরি করুন তার স্বামীর কাছে সে নগণ্য, বুদ্ধু। এই স্বামী শব্দটির মধ্যেই তো একরাশ অহংকার ভরা রয়েছে। স্বামী মানে মালিক। নারীকে তো কৃতদাসী বানিয়ে রাখা হয়েছে সেই কবে থেকেই।
আমার মতে, একটা দুটো ব্যতিক্রম ছাড়া নারী কোনও অংশেই স্বাধীন নয়। অধিকার চাইলে তাকে বাইরের রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হয়। যে সহ্য করতে না পারে তার আর ঘর থাকে না। সমাজ তাকে মন্দ মেয়ে ভাবে। যাদের সাহস বা শক্তি নেই তারা পায়ে শিকল বেঁধে মরে মরে বেঁচে থাকে। আমার লেখা একটি কবিতার লাইন বলতে ইচ্ছে করছে ‘সে বাঁচাকে কি বাঁচা কয়’?
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নারীই নারীর শত্রু। শাশুড়ি বউমাকে বা বউমা শাশুড়িকে কষ্ট দিচ্ছে। একে অপরের যন্ত্রণার কারণ না হয়ে একে অপরের সহায়ক হতে হবে। কীভাবে শিরদাঁড়া সোজা রেখে মানুষের মতো বাঁচা যায় সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যতক্ষণ না আমরা নিজেরা নিজেদের সম্মান করছি, ততক্ষণ কেউ আমাদের সম্মান করবে না।
নারী ঘরে ঘরে লাঞ্ছিত হয়। অনেক গুণের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও কিছুই করতে পারে না অনেকেই। সংসার সামলানোর জন্য, ছেলেমেয়ের পালন পালনের জন্য, শ্বশুর শাশুড়ির সেবা শুশ্রূষার জন্য ঘরের কোণে পড়ে পড়ে সকল গুণে জং ধরে যায়। এর থেকে দুঃখের আর কী থাকতে পারে? অনেক সংসারে ঘরে বসেও কিছু করার পারমিশন দেওয়া হয় না স্ত্রীকে। প্রতি পদক্ষেপে এই প্রবণতা যেদিন বন্ধ হবে, নারীকে যেদিন নারী নয় মানুষ ভাবা হবে প্রকৃতপক্ষে সেদিনই পালিত হবে মহিলা দিবস।