যাদবপুরের দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ হাইকোর্টে, রাজ্যের উপর আস্থা প্রধান বিচারপতির
High Court rejects Jadavpur's plea for urgent hearing, Chief Justice reposes faith in state

Truth Of Bengal: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এর ঘটনার পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও কোথাও অতি সক্রিয়তার অভিযোগে এর মামলায় ইন্টেলিজেন্স সংস্থার রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের।ওই সংস্থার ত্রুটি ছিল নাকি শিক্ষা মন্ত্রী ইন্টেলিজেন্স এর কাছে ওই দিন অশান্তির আঁচ এর খবর পেয়েও সেটা নেগ্লেট করেছে কি না এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দেবে রাজ্যে।
পাশাপাশি পুলিশকে তদন্তের সময় দিলো আদালত ।কারণ আদালত মনে করছে ঘটনার তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়। আজকের মধ্যে আহত ইন্দ্রানুজ এর অভিযোগ FIR হিসাবে ট্রিট করতে নির্দেশ পুলিশকে। আগামী ১২ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার নির্বাচন ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তাল পরিস্থিতির পর পুলিশের অতিসক্রিয়তা এবং নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মামলা বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলার শুনানি।
যাদবপুরের ছাত্র ছাত্রীদের তরফে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য: যাদব বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় 1 মার্চ প্রথম এফাইয়ার লজ হয় সাড়ে চারটের সময়। যেটি পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে করে। ওই এফাইয়ারে বলা হয়েছে একটি বৈঠক হয় যেখানে ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখায়।
শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং ছাত্রদের ওপর হওয়া অত্যাচারের কথা উল্লেখ করা হয় না। বলা হয়, ছাত্ররা বৈঠকের সময় ঝামেলা সৃষ্টি করার জন্যই বিক্ষোভ করে। ছাত্ররা ব্রাত্য বসু পথ আটকায়। তাঁর গাড়ির ওপর উঠে যায়। অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। ব্রাত্য বসু গাড়ির টায়ার থেকে হাওয়া খুলে নেওয়া হয়।
বিচারপতি: আপনি কি চান?
বিকাশ: এই সমস্ত অভিযোগগুলো বানানো। আমাদের দাবি আমাদের অভিযোগ নেওয়া হোক। ছাত্রদের তরফে করা অভিযোগ নিচ্ছে না পুলিশ।
বিচারপতি: 75 নম্বর পৃষ্ঠা দেখুন।
বিকাশ: এটা একজন বহিরাগতের অভিযোগ।
বিচারপতি: আপনার অভিযোগ কোথায়?
বিকাশ: ৪৪ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে। যেখানে আহত ছাত্র ইন্দ্রনুজ এফআইয়ার করার আবেদন জানিয়েছে। তারপরের পাতায় অন্য ছাত্রদের অভিযোগ রয়েছে
বিচারপতি রাজ্যকে প্রশ্ন: যখন ইমেল করে কমপ্লেন করা হয়েছে কেন অভিযোগ নেন নি?
রাজ্য (এজি কিশোর দত্ত): আমার সময় লাগবে। এখানে অভিযোগ করা হয়েছে কোনও ইফাইয়ার নেওয়া হয়নি। কোনও ঠিকানা নেই কিছু নেই।
বিচারপতি: সেই জন্য আপনারা অভিযোগ নেননি?
এজি: আমরা অভিযোগ নিয়েছি। যেখানে গাড়ির ওপর ওঠা কাঁচ ভাঙ্গা সবই বলা হয়েছে। একজন ছাত্র আহত হয়েছে তাঁকে কে পিসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে সেটাও বলা হয়েছে।
বিচারপতি: এগুলো তো সবই ওয়ান সাইডেড ভার্সন। কাউন্টার ভার্সন কোথায়? আপনারা ইন্দ্রানুজের অভিযোগ নেন নি কেন?
এজি: অভিযোগ নেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি: কোথায়?
এজি: পি এস কেস নম্বর ৪০
বিচারপতি: সব এফআইয়ারে ইন্দ্রনুজের নাম রয়েছে তার অভিযোগ নেন নি কেন?
এজি: আমি খুশি হতাম যদি সিসি টিভি ফুটেজ থাকত। পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি
বিচারপতি: আপনি কি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন?
এজি: আমরা জানতাম মন্ত্রী আসবেন সেই অনুযায়ী আমরা ফোর্স মোতায়েন রেখেছিল কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া আমরা ভেতরে ঢুকতে পারিনি।
বিচারপতি: খুবই দূর্বল যুক্তি। ঠিক আছে আপনারা ৪৪ নম্বর পৃষ্ঠায় যে অভিযোগ রয়েছে সেটাকে এফআইয়ার হিসেবে গ্রহণ করুন।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ(কিশোর দত্তের উদ্দেশ্যে): দেখুন আমি জানি পুলিশ অফিসারদের ডিউটি কনস্টিটিউশনাল অথরিটির নির্দেশ মেনে চলা। যদি সেখানে তাঁরা বাধাপ্রাপ্ত হন তাহলে এভাবে একটা সভ্য সমাজ চলতে পারেন না। দ্বিতীয়, দ্রুত গতিতে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর বিষয়টিকে আপনাদের নজরে রাখতে হবে।
এজি: এগুলো সবই এফাইয়ারে আছে। কিন্তু বিভিন্ন এফাইয়ারে মেনসন করা রয়েছে ধারাগুলি।
বিচারপতি: এগুলো সবই ওয়ান সাইডের। রাজ্যকে রাজ্যের মত আচরণ করতে হবে
এফাইইয়ার দায়ের করার জন্য মেটেরিয়াল প্রয়োজন হয় না।আমি একমাস সময় দিচ্ছি। তদন্ত করে জানান।
রাজ্য: ওদের অ্যাটিটিউড ঠিক ছিল না।
বিচারপতি: রাজ্যের গার্জিয়ান এর মত ব্যবহার করা উচিত।
বিকাশ: পুলিশ যথেচ্ছ ভাবে গ্রেপ্তার করছে। সার্চ করছে ছাত্রদের মেস।
বিচারপতি: এধরনের ঘটনা এপিডেমিকের মত ছড়িয়ে পড়বে। রাজ্যের ইন্টেলিজেন্স ফেল করলে কি করে হবে? আপনারা যে এত হোয়াটসঅ্যাপ দেখাচ্ছেন আপনাদের ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট ছিল কি? মন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন এই বিষয়ে?
নির্দেশ
ছাত্রদের বক্তব্য তাদের অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের বক্তব্য অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে। একটা কমিউনিকেশন জমা নেওয়া হয়েছে যেখানে ছাত্রছাত্রীদের স্বাক্ষর রয়েছে। তবে কোনো ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর নেই। এজি কিশোর দত্ত জানিয়েছেন ২ মার্চ যে অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত ইন্দ্রাণুজ তা এফআইয়ার হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সাত দিনের মধ্যে একটা বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করতে হবে রাজ্যকে যেখানে রাজ্য জানাবে কি কি ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তী শুনানি ১২ ই মার্চ বিকেল চারটের সময়।