মকর সংক্রান্তিতে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর প্রয়াগরাজ
Prayagraj, the most populous city in the world on Makar Sankranti

Truth Of Bengal: মকর সংক্রান্তির দিন বিশ্বের সবথেক জনবহুল শহরের নাম ছিল প্রয়াগরাজ। মহাকুম্ভের প্রথম অমৃত স্নান উৎসবে ভারত-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমনের কারণে এই কৃতিত্ব প্রয়াগরাজের খাতায় নথিভুক্ত হয়। প্রয়াগরাজের জনসংখ্যা একদিনে চার কোটি ছাড়িয়েছে। মকর সংক্রান্তিতে, ৩.৫০ কোটি মানুষ এখানে পবিত্র স্নান করেছিলেন। জেলার জনসংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ। অর্থাৎ মকর সংক্রান্তিতে আসা ভক্ত ও প্রয়াগরাজের জনসংখ্যা যোগ করা হলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪.২০ কোটি। জাপানের রাজধানী টোকিও বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর। সেখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৩.৭৪ কোটি। ২.৯৩ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে দিল্লি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর মঙ্গলবার ৪.২০ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে একদিনের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম শহর হয়ে উঠেছিল।
বিশেষ বিষয় হল, প্রয়াগরাজের জনসংখ্যা বিশ্বের অনেক দেশের চেয়েও বেশি ছিল মঙ্গলবার। পৌষ পূর্ণিমায়, মহাকুম্ভের প্রথম স্নান উত্সবে ১.৭৫ কোটি মানুষ পবিত্র স্নান করেছিলেন। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে স্নান করা লোকের সংখ্যার সঙ্গে যদি এই সংখ্যাটি যোগ করা হয়, তাহলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৫.২৫ কোটি।
এরপর মৌনী অমাবস্যার স্নান উৎসব রয়েছে ২৯ জানুয়ারি। অমাবস্যায় ছয় থেকে আট কোটি ভক্তের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৯ জানুয়ারি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর হতে চলেছে প্রয়াগরাজ।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল পাঁচটি শহরের আনুমানিক জনসংখ্যা-
টোকিও- ৩.৭৪ কোটি
দিল্লি- ২.৯৩ কোটি
সাংহাই- ২.৬৩ কোটি
সাও পাওলো- ২.১৮ কোটি
মেক্সিকো সিটি- ২.১৬ কোটি
মঙ্গলবার প্রয়াগরাজে মকর সংক্রান্তি উৎসবে সনাতন ঐতিহ্যের সবচেয়ে বড় মানবসমাবেশ দেখা গিয়েছে। ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করার বিশ্বাস উপচে পড়ে মঙ্গলবার। মেলা এলাকা ছাড়াও প্রধান সড়কগুলিতেও ছিল স্নানকারীদের ভিড়।
পাশাপাশি বিশ্বাসের নগরীতে দেখা গিয়েছে নানা রঙও। পূণ্যার্থীদের মা গঙ্গা ও ভোলে বাবার স্তব উচ্চারণে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা প্রয়াগরাজ। উচ্ছ্বাস ও উল্লাসের মধ্যে কয়েক কিলোমিটার হাঁটার ক্লান্তি আর ঠান্ডাও মানুষের বিশ্বাসকে নাড়া দিতে পারেনি।
পৌষ পূর্ণিমাতেই, সঙ্গম এবং আশেপাশের ঘাটগুলিতে ১.৫ কোটিরও বেশি মানুষ ডুব দিয়েছিলেন। পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ছিল মকর সংক্রান্তির অমৃতস্নান উৎসব। এমতাবস্থায় প্রায় ১০ লক্ষ কল্পবাসী ও তাঁদের পরিবার ছাড়াও বিপুল সংখ্যক ভক্তও পুণ্যস্নান করেন। এছাড়া আখড়া-সহ অন্যান্য সাধু ও তাঁদের অনুসারীরাও সোমবার মেলা এলাকায় পৌঁছন। মঙ্গলবারও ছিল স্নানকারীদের ব্যাপক ভিড়। সকাল থেকেই সব রুটে শুধু ভক্তদের ভিড় দেখা গিয়েছে। অবস্থা এমন ছিল যে কালী মার্গ, বাঁধ এবং সমস্ত পল্চুন সেতুতে তিল রাখার জায়গা ছিল না। সর্বত্র দেখা গিয়েছে ভক্ত, সাধু ও তাঁদের অনুসারীদের। বহু সংখ্যক মানুষ ভজন গেয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন দৃশ্যও মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এই ধারাবাহিকতা চলে গভীর সন্ধ্যা পর্যন্ত।