খেলারাজ্যের খবর

বিশ্ব নারী দিবসে শিরোপার নজির মহিলা ফুটবলার সঙ্গীতা রায়ের

Women's footballer Sangeeta Roy's example of a title on International Women's Day

The Truth Of Bengal, Hooghly:  বিশ্ব নারী দিবসে খুঁজে পাওয়া গেল গোঘাটের এক মহিলা ফুটবলার সঙ্গীতা রায় কে। গ্রাম্য পরিবেশে গড়ে ওঠা ছোট থেকে তার নিজের জীবনকে ফুটবলের সাথে মিলিয়ে ফেলেছে । এখন শুধু গ্রামের মাঠেই নয় ভিনরাজ্যে ফুটবলে খেলে বাজিমাৎ করছে হুগলির সঙ্গীতা। সে বাংলা থেকে মহিলা ফুটবল লীগে সুযোগ পেয়েছে। ত্রিপুরায় ফুটবল লীগে সেরা গোলদাতা হিসাবে সোনার পদক ও পেয়েছে। এই ফুটবল ঘিরে ছোট থেকে সঙ্গীতার একাধিক সেরা শিরোপার নজির রয়েছে। যেমন নিজে খেলে তেমনই অন্যদের আগামীতেও যাতে হাজারো সঙ্গীতা ফুটবলার গড়ে ওঠে তার জন্য নিজেই ছোটদের কোচিং দিচ্ছে। তার বাড়ি আরামবাগ মহকুমার গোঘাটের মাধবপুর গ্রামে।

সঙ্গীতা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এক সাধারণ মেয়ে। তার বাড়িতে মা বাবা ছাড়াও পরিবারে রয়েছে পাঁচ বোন, আর সঙ্গীতা হল সবথেকে ছোট। সে ছোট্টবেলা থেকেই ফুটবল খেলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও মেধাবী। বর্তমানে গোঘাটের গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশোনা করছে। আর সামনে বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে তার এই সাফল্যে বেজায় খুশি মহকুমার সাধারণ মানুষজন। সংগীতা ছোট্টবেলা থেকে ফুটবল খেলার জন্য কোচিং নিয়েছিল। সে প্রতিদিনই আরামবাগের বিশালক্ষী মাতা মহিলা কোচিং ক্যাম্পে প্র্যাকটিস চালিয়ে যেত। আর ওখান থেকে আস্তে আস্তে বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দিত এই কোচিং ক্যাম্প। এর আগে বিভিন্ন জায়গায় সঙ্গীতা ফুটবলে বাজিমাত করে এসেছে। মহিলা কোচিং ক্যাম্প থেকে গুজরাটে এবং ছত্রিশগড়ে ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলে।

উল্লেখ্য, ছোট থেকে সঙ্গীতা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা মেয়ে নিত্যদিন কোচিং করে লড়াই চালিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় খেলে বেরিয়ে আসছে। বেশ কয়েক বছর আগে কন্যাশ্রী কাপ খেলেছিল সেখানে ঘোষণা হয়েছিল যারা চ্যাম্পিয়ন এবং বিজয়ী হবে তাদেরকে একজন করে সিভিক পুলিশের চাকরি দেওয়া হবে। আর সেই মতোই কয়েক মাস আগেই গোঘাট থানায় চাকরিতে যোগ দিয়েছে সঙ্গীতা। এভাবে দিনের পর দিন তিনটে বিষয়কে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে জীবন যুদ্ধে।

এই বিষয়ে সঙ্গীতা জানায়, “বাবা দিনমজুরের কাজ করে কোনরকমে সংসার চালায় । সবেমাত্র হাটতে শিখেছি, বাবার মুখেই শোনা অনেক কষ্টে পয়সা জমিয়ে আমার খেলার জন্য বাড়িতে বাবা একটি ফুটবল কিনে নিয়ে আসে। সেই বাবার দেওয়া প্রথম আমার জীবনে ফুটবল আজ আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে। তারপর যত বড় হয়েছি ফুটবলের প্রতি আরও আকৃষ্ট হয়েছি। এখন ফুটবলই আমার জীবন। পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। ছোট থেকেই আমি ফুটবলে আকৃষ্ট তাই বাবা আমাকে ফুটবল খেলায় যুক্ত করে। তারপর কষ্টের মধ্যে দিয়ে সাইকেল নিয়ে কোচিং করে ভালো ফুটবল খেলতে পারি। আর সেখান থেকেই একের পর এক সাফল্য আসে আমার জীবনে। পাশাপাশি আমি খেলার পর সিভিক পুলিশের চাকরি ও পেয়েছে শুধু তাই নয় পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছে”।

বর্তমানে মেয়েরাও যে কোন অংশে পিছিয়ে নেই সেটা বারবার প্রমান করে দিচ্ছে সঙ্গীতার মতো লড়াকু মেয়েরাই। যদি জীবন যুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারা যায় তাহলে সঙ্গীতার মতো অনেক মহিলা আরও এগিয়ে আসবে। সব মিলিয়ে সঙ্গীতা জানায়, “আমার মত যে সমস্ত মহিলারা আছে তারা যদি এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে হয়তো কোন দিকে থেকে পিছিয়ে পড়বে না”।

FREE ACCESS

Related Articles