রাজ্যের খবর

হুগলিতে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আতঙ্কিত প্রিয়নগরবাসী

Wife hacked to death in Hooghly, Priyanagar residents terrified

Truth Of Bengal: রাকেশ চক্রবর্তী, হুগলি: হুগলির চুঁচুড়া কোদালিয়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রিয়নগর দক্ষিণ এলাকায় ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ও নৃশংস ঘটনা। দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী উজ্জ্বল শীল (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করল স্ত্রী ঝর্ণা ঘোষকে (৫৮)। এই মর্মান্তিক ঘটনার জেরে গোটা এলাকায় শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন ঝর্ণা দেবী। স্বামী উজ্জ্বল শীলের সঙ্গে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি। সংসার চলত মূলত ঝর্ণা দেবীর আয়ে—তিনি পরিচারিকার কাজ করতেন। পারিবারিক অশান্তি মাঝেমধ্যে থাকলেও এমন ভয়ানক ঘটনার পূর্বাভাস কেউই পাননি।

শনিবার রাতে উজ্জ্বল শীলের শরীর খারাপ হলে বাড়ির মালিক ঝর্ণা দেবীকে খবর দেন। সারা দিন কাজের শেষে তিনি স্বামীর খোঁজ নিতে ঘরে ঢুকতেই উজ্জ্বল শীল ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর ওপর। এলোপাথাড়ি কোপে ঝর্ণা দেবী রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। মৃত্যুর আগে শেষ মুহূর্তে তিনি নিজের প্রথম পক্ষের ছেলেকে ফোনে জানান, “আমাকে কুপিয়ে দিল।”

খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝর্ণা দেবীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করেন এবং পুলিশে খবর দেন। চুঁচুড়া থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত উজ্জ্বল শীলকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে পুলিশ।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমেছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। এলাকায় মোতায়েন হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। প্রতিবেশীরা কেউই ভাবতে পারছেন না, দীর্ঘদিনের সঙ্গী এমন নৃশংসভাবে হত্যা করতে পারে।

ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে রয়েছে রক্তের দাগ, স্তব্ধ চারপাশ। প্রতিবেশীরা বলছেন, “ঝর্ণা দিদি খুব পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। সংসারের জন্য যেভাবে দিনরাত খেটেছেন, তাঁর এমন পরিণতি হবে, ভাবিনি।”

পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানসিক ভারসাম্যহীনতা, পারিবারিক অশান্তি কিংবা আর্থিক দ্বন্দ্ব—সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Related Articles