রাজ্যের খবর

বন বিবির পাকা উপানাগার সুন্দরবনে পর্যটকদের সমাগম

Sundarbans

The Truth of Bengal: খাঁড়ি, বাদাবন আর মউলি-মেছুয়ার জঙ্গলে এই বনবিবি একমাত্র রক্ষাকর্তা৷ কেউ কেউ বলেন,রাখে বনবিবি তো মারে কে ? ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমীরের সঙ্গে যু্দ্ধ করা সুন্দরবনবাসী বরাবরই বনদেবতার ওপর ভরসা রাখেন।সেইমতো  ২০২২-এর নভেম্বরে বসিরহাটের সুন্দরবন লাগোয়া হিঙ্গলগঞ্জের সামশেরনগরের কালীতলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে স্থানীয় মানুষদের দাবি ছিল বনবিবির এই মাটির কাঁচা থানটাকে যেন পাকা করে দেন। আর সেই দাবি মত বনবিবির থানটি নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই দাবি মতো ২৯শে নভেম্বর ২০২২ সালে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনবিবি থানটির শিলান্যাস করেন। দাবি মতো মুখ‍্যমন্ত্রীর নির্দেশে বনবিবির থানটি নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বছর ঘুরতেই দেখা গেল সুন্দরবনের জঙ্গলের খাঁড়ির পাশে সেজে উঠছে বনবিবি মন্দির।

এবার অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।সুন্দরবন এলাকার মানুষ জীবিকার সন্ধানে জলে-জঙ্গলে যাওয়ার আগে বনবিবিকে পুজো দিয়ে যান। আবার ফিরে আসার সময় বনবিবির আশীর্বাদ নিয়ে বাড়ি ফেরেন। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪নং সামশেরনগরের কুঁকড়েখালি জঙ্গল ও নদীর পাশে এই বনবিবির মন্দির যেন সুন্দরবনের হৃদপিণ্ড। কথিত আছে, বনবিবির থান হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। হিন্দু-মুসলমান ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ এখানে পুজো দেন। মন্দির সংলগ্ন খাঁড়ির ওপারে বাঘ সংরক্ষিত এলাকা বা বাফার জোন। বনবিবির মন্দিরে পুজো দিয়ে মধু সংগ্রহ করতে বা কাঁকড়া ধরতে যান এলাকার বাসিন্দারা।

কথিত আছে, আঠারো ভাটির দেশ’ সুন্দরবনে রাজ করে দানব দেবতা দক্ষিণরায়, তাঁর রাজত্বে পেটের টানে ঢুকে পড়া ভাটির মানুষদের বাঘ হয়ে খেয়ে ফেলে সে। বনবিবি আর তাঁর মুগুরধারী ভাই জঙ্গলি শাহ, সেখানে এসে যুদ্ধে হারায় দক্ষিণরায়কে। চুক্তিও হয়, বাদাবনের যে অংশে মানুষের বাস, তা থাকবে বনবিবির আঁচলের তলায়। আর গভীর দক্ষিণের জল-মাটি দক্ষিণ রায়ের থাবায়। সেই থেকে বাদাবন আর খাঁড়ি-জঙ্গলের মানুষের মা বনবিবি। এখন হিঙ্গলগঞ্জের এই মন্দির এলাকাবাসীর মতোই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।দূর-দূরান্তের মানুষের ভিড় বাড়তে তাতে এলাকার মানুষের আয় উপার্জন বাড়বে বলে আশা সুন্দরবনবাসীর।

Related Articles