রাজ্যের খবর

সম্প্রীতির মেলবন্ধন! মুসলিম শিল্পীর তুলিতে জীবন্ত মহাভারতের চরিত্ররা, প্রশংসিত আর্ন্তজাতিক স্তরেও

The characters of Mahabharata come alive in the paintings of Muslim artists

The Truth of Bengal: মহাভারতের কথা পটচিত্রে তুলে ধরেছেন পূর্বমেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের আবেদ ও সায়রা চিত্রকর দম্পতি। শিল্পীদের তুলিতে ফুটে উঠেছে চিরাচরিত ভাবনা। পটচিত্রের কারুকাজ বা ভাবনা  সবমহলের কাছে আলাদা সাড়া ফেলেছে। জাতীয়ও আর্ন্তজাতিক স্তরে বাংলার এই পটের কাহিনী বিশেষ ছাপ রাখছে।

পটচিত্র মানে, পটে আঁকা চিত্র। পট শব্দের অর্থ কাপড়। কাপড়ের ওপর দেশি রং দিয়ে বিশেষ ছবি আঁকা হয় বহুকাল ধরে। যখন কোন রীতিসম্মত শিল্পকলার অস্তিত্ব ছিল না তখন এই পটচিত্র প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যকে সযত্নে ধরে রেখেছে। বারো থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এই শিল্পের ঐতিহ্য প্রকাশ্যে আসে।যাঁরা পটে ছবি আঁকেন তাঁদের পটুয়া বলা হয়।শিল্পীরা বংশানুক্রমিকভাবে পটচিত্র এঁকে চলেছেন। পটচিত্র একটি অতি প্রাচীন লোকশিল্প। প্রাচীনকালে কাপড় বা কাগজের উপর দেবদেবীর প্রচলিত কাহিনীর ছবি লিখে গ্রামে গ্রামে ঘুরে গান গেয়ে পট দেখাতেন কিছু মানুষ। এটাই তাদের একমাত্র জীবিকা, লোকে তাদের বলতেন ‘পটুয়া’ তারা ‘পটিদার’ নামেও অনেকাংশে পরিচিত ছিল। তাদের বেশির ভাগের পদবী সাধারণত ‘চিত্রকর’। এমনকি চিত্র দেখিয়ে সঙ্গীত পরিবেশনও করেন পটশিল্পীরা। ইতিমধ্যে পিংলার পটচিত্র ইউনেস্কোর সম্মান লাভ করেছে। পটের বিষয়বস্তু বড় বিচিত্র।পটচিত্রে ধর্মীয়,সামাজিক, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, পরিবেশগত ও বিষয়নিরপেক্ষ ভাবনা জায়গা পায়।  পৌরাণিক কল্প-কাহিনীর রমরমা দেখা যায় পটচিত্রে। পশ্চিমবঙ্গের পিংলার মতোই  পূর্বমেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে আবেদ ও সায়রা চিত্রকর দম্পতির তুলিতে ফুটে উঠেছে মহাভারতের সনাতন কথাও কাহিনী।

পটচিত্র নিয়ে বিভিন্ন গবেষক দল বারেবারে এসেছে এই পটচিত্রের গ্রামে। শুধু পট চিত্র অঙ্কন নয় তার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক সর্তকতা মূলক বার্তা দেওয়া হয়েছে। সচেতনতার বার্তা দেওয়ার জন্য বারে বারে প্রয়াসী হয়েছে এই পটচিত্র কাররা। মহাভারতের বিভিন্ন চরিত্র কাহিনী গুলো ফুটিয়ে তুলেছেন পটচিত্রের তুলির টানে। ধর্মীয় ভাবনা ঐতিহ্য ও শিল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে পটচিত্রের আঙ্গিকে।এর আগে মহাভারত ও রামায়ণ উপখ্যান থেকে চরিত্র খুঁজে নিয়ে উজ্জ্বল রঙে আঁকা হতো। পটে আঁকা হতো দুর্গাপট ও লক্ষ্মীপট। মাটির প্রতিমা গড়ে পূজা করার সাধ্য ছিল অল্প লোকের। তারা পটের আশ্রয়ে দেব-দেবীর পুজো করতো। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী শিল্পের অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে।তবু এই শিল্পীরা পুরনো রীতিকেই আঁকড়ে ধরে শিল্পের বিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা করছেন।

Related Articles